অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণকে (৩৬) শ্রেণিকক্ষে হত্যার পর লাশ ছয় টুকরো করে পুঁতে রাখে দুই বন্ধু মোতালেব ও রবিউল। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। সাভারের রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে লাশের পাঁচটি অংশ উদ্ধার করেছে র্যাব। মাথা আশকোনার একটি ডোবা থেকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার রূপায়ন স্বপ্ন নিবাস আবাসনের সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আঙিনা থেকে পুঁতে রাখা লাশের পাঁচ টুকরো উদ্ধার করে র্যাব।
গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার নরসিংহপুর সংলগ্ন বেরন এলাকার রূপায়ন মাঠের নিজ বাসা স্বপ্ন নিবাস থেকেই নিখোঁজ হন মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মণ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শর্ত বর্মণের ছেলে।
জানা যায়, গত ১৩ জুলাই আশুলিয়ার জামগড়া সংলগ্ন বেরন এলাকার রূপায়ন মাঠের নিজ বাসা স্বপ্ন নিবাস থেকে নিখোঁজের পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। সাত দিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে অবশেষে ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ। পরে ৯ আগস্ট ছায়া তদন্ত করে তিনজনকে আটক করে লাশের অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অভিযান পরিচালনা করে লাশের পাঁচ টুকরো উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ জানান, তার ভাই মিন্টু চন্দ্র বর্মণ দুই বন্ধু মিলে দুই বছর আগে সাভারে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করেন। যার নাম দেন সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন মিন্টু। কিন্তু হঠাৎ ভাই উধাও হয়ে যায়। আজ শুনি ভাইয়ের বন্ধুরাই তাকে হত্যা করেছে। আমি উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, মিন্টু স্যার অনেক ভালো ছিল। তিনি অনেক ভদ্র ছিলেন। মোতালেব ও রবিউল স্যারও অনেক ভালো ছিলেন। তারা এই কাজ করতে পারেন এটা বিশ্বাসই হচ্ছে না।
র্যাব সদর দফতরের মিডিয়া উইংয়ের কমান্ডার মঈন খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রথমে ৭ জুলাই মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে ১৩ জুলাই স্কুলটিতে কোচিং পরবর্তী সময়ে ১০৬ নম্বরে মিন্টুকে ডেকে নিয়ে যায় বাদশা ও মোতালেব। এ সময় মিন্টুর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে বাদশা আঘাত করে। পরে ছয় টুকরো করে মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়। বাকি পাঁচ টুকরো স্কুলের আঙিনায় পুঁতে রাখে তারা।
তিনি আরও বলেন, মিন্টু বর্মণের সুনাম ও খুব ভালো শিক্ষক হওয়ায় পেশাগত হিংসা শুরু করেন তারা। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। এর জের ধরেই তাকে হত্যা করে তারা। এরপর থেকেই রবিউল পলাতক ছিল। গতকাল রাতে রবিউলকে আব্দুল্লাপুর থেকে, তার ভাগ্নে বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেবকে আশকোনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রবিউলের দেওয়া তথ্য মতে, স্কুলের আঙিনা থেকে মিন্টুর শরীরের পাঁচটি অংশ উদ্ধার করা হয়।