টাঙ্গাইলে আউশ ধানের সুদিন ফিরছে আবারও। টাঙ্গাইল জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ২৫৬ ভাগ বেশি জমিতে হয়েছে আউশের আবাদ। আউশের হারানো দিন ফিরিয়ে আনতে কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনায় কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকরা বলেছেন একদিকে বন্যা না থাকা আবার অন্যদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।
আউশ ধান ৭০ দশকের আগে সারাদেশসহ টাঙ্গাইলেও ছিল প্রধান ফসল এবং দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল আমন। সে সময় পঙ্খিরাজ, ধারিয়াল, হাসিকলমি, কটকতারাসহ স্থানীয় নানা জাতের আউশ ধান কর্তনের পর গ্রামের মা-বোনেরা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন সেই সব খাবার তৈরিতে।
ওইসব ধানের পিঠা, মুড়ি, চিড়া, খৈ, পায়েসের স্বাদ ছিল ভিন্ন। ৭০ দশকের পর সেচ নির্ভর বোরো আবাদের প্রচলন শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাড়তি মানুষের খাদ্যের জোগান দিতে গিয়ে অধিক উৎপাদনশীল সেচ নির্ভর বোরো ধান চাষে মানুষ ঝুঁকে পড়ে। যার ফলে পরিবেশবান্ধব ও বৃষ্টি নির্ভর ফসল আউশ ধানের চাষ একেবারেই কমে যায়।
আবারো আউশ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় ও টাঙ্গাইল কৃষি বিভাগের উদ্যোগে। আবার আউশ ধান আবাদের জন্য কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।
যার ফলে চলতি বছরের এ মৌসুমে টাঙ্গাইলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ২৫৬ ভাগ বেশি জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে।
আধুনিক কলাকৌশল ব্যবহার করে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় সঠিক নিয়মে জমির পরিচর্যা করে, বন্যা না থাকায় ও আবহাওয়া অনুকূলের কারণে ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষকরা হারিয়ে যাওয়া আউশ ধান নতুন করে আবাদ করে বাড়তি লাভবান হওয়ার আসায় খুশি ।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে জেলায় আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ শত ৫২ হেক্টর জমি। তার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ২৪ শত ৫২ হেক্টর জমিতে। তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতকরা ২৫৬ ভাগ বেশি। জেলায় প্রায় ৭ হাজার কৃষকের মধ্যে এ মৌসুমে আউশ ধানের বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নজরুল ইসলাম নামেরে এক কৃষক বলেন, বিনা পয়সায় সরকার থেকে আমাদের সার ও বীজ দিছে। এবারই প্রথম আমি এ ধান আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আউশ ধান কেটে আমরা রোপা আমন ধান লাগাবো। একই জমিতেই আমরা তিনবার ধান আবাদ করতে পারতাছি এতে আমি খুবই খুশি।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর আমাদের জেলায় আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৯ শত ৫২ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ২৪ শত ৫২ হেক্টর জমিতে।
প্রায় ৩৫ ভাগ জমির ধান এ পর্যন্ত কর্তন হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩.৮৭ মেট্রিক টন ধান উৎপদিত হয়েছে। প্রতি হেক্টরে চালের হিসেবে ২.৫৮ মেট্রিক টন। আমি মনে করি ফলন খুব ভালো হয়েছ