সারা বছরই নানা রকম মৌসুমি ফল চোখে পড়ে। তার মধ্যে দেশি ফল হিসেবে আমড়া মুখরোচক ও সুস্বাদু। আমড়া কাঁচা ছাড়াও আচার, জ্যাম, চাটনি ও রান্নাসহ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়।
অনেক আয়ুর্বেদিক গুণাগুণও রয়েছে আমড়ার। আমড়াকে আয়ুর্বেদে বলা হয় আম্রতক। তাছাড়াও আমড়াগাছের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। আমড়া গাছের অংশ বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। যেমন ডায়রিয়া, কানের ব্যথা, ক্ষত এবং হাইপারসিডিটি চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতেও আমড়ার ভূমিকা অসাধারণ। একটি আমড়াতে একটি আপেলের চেয়েও বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে। এজন্য আমড়াকে গোল্ডেন আপেলও বলা হয়ে থাকে। জেনে অবাক হবেন যে- আমড়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী এমনকি ডায়রিয়া, জ্বর, জ্বলাপোড়া, হজমের সমস্যায় ও কফসহ নানা রকম সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
আমড়ার অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন-
১. আমড়া হজমে উপকারী:
অনেক পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকেআমড়ায়। ফলে এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক কার্যকরী। তাছাড়া হজমের কারণে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সমস্যাগুলো দেখা দিলে তা দূর করতেও অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে আমড়া। খাবারের পর যদি নিয়মিত আমড়া খাওয়ার অভ্যাস করা যায় তাহলে তা হৃদরোগে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে অনেকটাই।
২. হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমড়া-
আমড়ায় প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে। যার ফলে এটি শরীরে হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সহায্য করে। যার কারণে শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া আমড়াতে শরীরের রক্তাস্বল্পতা ও অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধেও অনেক উপকারী।
৩. আমড়া ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল-
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় আমড়াতে। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতসহ নানান রোগের নিরাময়ে অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে ভিটামিন সি। এছাড়াও আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি মানুষের দেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। এমনকি ত্বকের উজ্জ্বলতা, ত্বকের বলিরেখা ও দৃঢ়তা বজায় রাখতে ও প্রতিরোধেও অনেক ভালো কাজ করে।
৪. হাড়কে মজবুত করে আমড়া-
আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামও পাওয়া যায়। সে জন্য নিয়মিত আমড়া খেলে প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে পারে। আমড়া হাড়ের যে কোনো রোগ দূর করা ছাড়াও হাড়কে শক্তিশালী রাখতেও সাহায্য করে ।
৫. আমড়া পেশিশক্তি বৃদ্ধি করে
থিয়ামিন নামের একটি উপাদান পাওয়া যায় আমড়াতে, যা মানুষের শরীরে পেশি সংকোচন ও স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সহায়তা করে। এজন্য আমড়া মানুষের পেশির দুর্বলতা দূর করে পেশিকে শক্তিশালী করতে উপকারী হিসেবে কাজ করে।