দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। এই সময়ে যে কোন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকলেও করোনামুক্তিতে আয়োজন করা হল বিরাট সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। আর সেই সংবর্ধনা নিলেন খোদ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তার সংবর্ধনা নেয়ার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যপক সমালোচনা হচ্ছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল মারুফ টানা দুই সপ্তাহের বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকার পর করোনা প্রতিবেদনে নেগেটিভ আসে। এ জন্য তাকে ধুমধাম করে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
অফিসার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে তার নিজস্ব কার্যালয়ে স্থানীয় ভূমি, কৃষি, জনস্বাস্থ্য ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি তার হাতে তুলে দেওয়া হয় করোনা মুক্তির সনদ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. বিশ্বেশ্বর রায় সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে করোনাভাইরাস নেগেটিভ আসে ইউএনওর। এর আগে গত ১৩ জুলাই তিনি করোনা পজিটিভ হন। সেই থেকে তিনি বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
এদিকে, করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ায় বুধবার দুপুরে ইউএনও মোহাম্মদ-আল-মারুফকে অফিসার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা সনদ দেওয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদ আল হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা একেএম ফরিদুল হক, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. বিশ্বেশ্বর রায়, সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মন্ডল ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী খোকন রানা। পরে উপস্থিত সবাই তাঁকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
সংবর্ধনার ছবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ ফেসবুকে পোস্ট করার পরই ঘটনাটি সবার নজরে আসে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
করোনাকালে ইউএনওকে এভাবে সংবর্ধনা কেন দেওয়ার প্রয়োজন মনে হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটা করে কোনো সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি। তার অফিসে গিয়ে অফিসার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি করোনা সনদ হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি করোনা মোকাবিলায় চলমান লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে থেকে কাজ করছেন। এ জন্য মানসিক শক্তি জোগাতে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে।