১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, বুধবার

সামরিক বাহিনীতে নিয়োগে নারীর কুমারীত্ব পরীক্ষা বাতিল ইন্দোনেশিয়ার

Advertisement

ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনী ক্যাডেট পদের জন্য আবেদনকারী নারীদের ‘কুমারীত্ব পরীক্ষার’ একটি বিতর্কিত চর্চার ইতি টানছে। দেশটির সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ আনদিকা পেরকাসা বিতর্কিত এই নিয়োগ পদ্ধতির অবসানের ঘোষণা দিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা; যারা সামরিক বাহিনীতে নারীদের নিয়োগে কুমারীত্ব পরীক্ষার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট নিয়োগের সময় নারীর কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয়। নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইচআরডব্লিউ ২০১৪ সালে এক তদন্তের পর দেশটির টু ফিঙ্গার টেস্ট নামের এই পদ্ধতিকে ‘অবমাননাকর, নিপীড়নমূলক এবং নিষ্ঠুর’ বলে নিন্দা জানিয়ে অবসানের দাবি জানায়।

২০১৭ সালেও ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতি ফের বিতর্কিত ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের আহ্বান জানায় এইচআরডব্লিউ। এর আগে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, নিয়োগপ্রাপ্তদের নৈতিকতা নির্ধারণে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও বলেছে, এ ধরনের পরীক্ষার বৈজ্ঞানিক কোনও বৈধতা নেই। নারীদের সতীচ্ছদ অথবা হাইমেনের উপস্থিতি সহবাসের নির্ভরযোগ্য মানদণ্ড হতে পারে না।

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ আনদিকা পেরকাসা বলেছেন, সেনাবাহিনীতে এ ধরনের আর কোনও পরীক্ষা হবে না।

চিফ অব স্টাফের এই মন্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দেশটির সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র। গত সপ্তাহে আনদিকা বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে নারী এবং পুরুষের নিয়োগের প্রক্রিয়া অবশ্যই এক হতে হবে।

এদিকে, দেশটির নৌবাহিনীতে নারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করা হয়। তবে নির্দিষ্টভাবে তাদের কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয় না বলে বুধবার নৌবাহিনীর মুখপাত্র জুলিয়াস উইদজোজোনো জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুরুষ এবং নারী— উভয়ের নিয়োগ পরীক্ষা একই।

সেনাবাহিনীতে কুমারীত্ব পরীক্ষার অবসানের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতাবিষয়ক ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় কমিশনের প্রধান অ্যান্ডি ইয়েনত্রিয়ানি বলেছেন, কখনই এ ধরনের পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল না। ইন্দোনেশিয়ায় এইচআরডব্লিউর গবেষক অ্যান্দ্রিয়াস হারসোনো বলেছেন, সেনাবাহিনী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি অবমাননাকর, বৈষম্যমূলক ছিল।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন, গেটে ইমেজ।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement