১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, বুধবার

লুট করা ১৭ হাজার শিল্পকর্ম ইরাককে ফিরিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

Advertisement

ইরাক থেকে লুট করা ১৭ হাজার শিল্পকর্ম ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই খবর জানিয়েছে। এসব শিল্পকর্ম ইরাক হামলার সময় লুট করা হয়েছিল।

ইরাকের সংস্কৃতি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লুট হওয়া হাজার বছরের পুরাতন সম্পদ ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরাক সরকার একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে।

ফিরিয়ে দেওয়া শিল্পকর্মের মধ্যে ৩ হাজার ৫শ বছরের পুরাতন মাটির ফলকে লেখা পৃথিবীর প্রথম মহাকাব্য গিলগামেশের উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে।

ইরাকের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হাসান নাধিম জানান, সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্র গিলগামেশ শিল্পকর্মটি ফিরিয়ে দেবে।

এর আগে গত ১ আগস্ট ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-খাদেমি পুনরায় বাগদাদে ইরাক জাদুঘর খোলার নির্দেশ দেন।

ইরাক থেকে লুট হওয়া শিলালিপিগুলো ৪ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো। এগুলো সুমেরীয় সভ্যতার ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন নথি বহন করে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৩ সালে আমেরিকান সেনাদের হাতে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর প্রস্তরযুগ, ব্যাবিলিয়ন, আসিরিয়ান ও ইসলামিক যুগের প্রায় ১৫ হাজার পুরাকীর্তি চুরি বা ধ্বংস করে লুটেরাদের দল।

ইরাকের প্রায় ১০ হাজার এলাকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু এসব জায়গার অধিকাংশই সুরক্ষিত নয়।

২০১৪ সালে ইরাকে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক এস্টেটের (আইএস) আবির্ভাব ঘটে। তারা দেশটির এক তৃতীয়াংশ এলাকা দখল করে ইসলামি খিলাফত গঠন করেন। এই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরাকের হাজার বছরের ঐতিহ্য অসংখ্য শিল্পকর্ম ধ্বংস করে দেয়। ২০১৭ সালে ইরাক এবং আন্তর্জাতিক বাহিনী এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়।

প্রসঙ্গত, পৃথিবীর প্রথম উপন্যাসের নাম গিলগামেশ, যা প্রায় চার হাজার বছর আগে প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় অর্থাৎ বর্তমানের ইরাক আর সিরিয়া লেখা হয়েছিল। লেখকের নাম জানা যায়নি। বইটা কেন লেখা হয়েছিল, কে তার পাঠক ছিল, সেসবও কেউ জানে না। পৃথিবীর প্রাচীনতম বর্ণমালা কিউনিফর্মে (কীলকাকার) লেখা হয়েছিল বইটা। এই নাম এসেছে অক্ষরগুলোর আকার থেকে। তখনকার লিপিকারেরা কাদামাটির ওপর নলখাগড়া দিয়ে কীলক খোদাই করে লিখতেন।

হাজার হাজার বছর ধরে কেউ এই লেখা পড়তে পারেনি। ১৮৭০ সালে জর্জ স্মিথ নামে লন্ডনের এক শ্রমজীবী মানুষ ব্রিটিশ জাদুঘরের এই মাটির ফলক দেখতে দেখতে তার পাঠোদ্ধার করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement