১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, মঙ্গলবার

সরানো হলো এডিসি সাকলায়েনকে

Advertisement

চিত্রনায়িকা পরীমণিকে নিয়ে ১৮ ঘণ্টা বাসায় সময় কাটানোর অভিযোগ ওঠায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত এডিসি গোলাম সাকলায়েনকে ডিবির সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

আজ শনিবার ডিএমপির মিডয়া উইং থেকে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এডিসি গোলাম সাকলায়েনকে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিমে পদায়িত করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হিসেবে কর্মরত সাকলায়েন সাভারের বোট ক্লাবে পরীমণীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সুপারভাইজিং তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন।

তদন্ত কার্যক্রম চলাকালে তার বাসায় একাধিকবার যাতায়াত করেছেন পরীমণি। এ সময় পরীর সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে তার। এই পুলিশ কর্মকর্তা ও পরীমণি বিভিন্ন সময় গাড়িতে একসঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরাও করেছেন। সম্প্রতি সাকলায়েনের বাসায় যাতায়াতের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশিত হয়েছে।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখা যায়, ১ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে পরীমণির সাদা রংয়ের হ্যারিয়ার গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫ ৯৬ ৫৩) নিয়ে গোলাম সাকলায়েনের রাজারবাগের অফিসার্স কলোনির মধুমতি ভবনের ৯/সি নম্বর সরকারি ফ্ল্যাটের বাসায় আসে। প্রথমে সেই গাড়ি থেকে লাল রংয়ের টি-শার্ট পরে বের হন সাকলায়েন। সাদা রংয়ের একটি স্লিপিং গাউন পরে নামেন নায়িকা পরীমণি। সেই রাতে সোয়া ২টায় ওই ভবন থেকে বের হন পরীমণি। তবে রাতে বের হওয়ার সময় পরীমণির পরনে ছিল কালো রংয়ের পোশাক, আর সাকলায়েনের গায়ে সাদা টি-শার্ট।

সম্প্রতি ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদেও পরীমণি সাকলায়েনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে পরীমণির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুও এ সম্পর্কে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন।

ডিবির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, সাকলায়েন নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে মামলার তদন্তের সময় পরীমণির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু সাকলায়েন বিবাহিত, বিষয়টি জানার পর পরীমণি ও তার মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। পরে দীপুর উদ্যোগে পরীমণির সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভবিক হয়। গত কোরবানি ঈদের সময় পরীমণির বাসায় তিন দিন ছিলেন সাকলায়েন। তখন বাসায় তারা ছাড়া আর কেউ ছিল না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে মিন্টু রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ের বাইরে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ। এসময় মামলার বাদীর সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার ১৮ ঘণ্টা বাসায় সময় কাটানোর বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। প্রশ্ন শুনে হারুন অর রশীদ উত্তর না দিয়েই ডিবির গেটের ভেতরে চলে যান।

এদিকে শনিবার (৭ আগস্ট) সকালে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- বোট ক্লাবের শ্লীলতাহানি চেষ্টার মামলার বাদী পরীমণির সঙ্গে ১৮ ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন, এটা তদন্তে উঠে আসবে কি না?

উত্তরে শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা থ্রোলি তদন্ত করব। এই বিষয়টি আমাদের তদন্তে থাকবে। আমরা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে যা পাব এবং মিডিয়াতে যা এসেছে সব নিয়েই তদন্ত করব। কেউ তদন্ত কর্মকর্তা হোক আর অন্য কেউ হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যেটি সত্যি সেটি উদঘাটন করা হবে।’

গোলাম সাকলায়েন ৩০তম বিসিএসএর অফিসার। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী। সাকলায়েনের স্ত্রী প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি জেলায় তার স্ত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement