১৬ মার্চ, ২০২৫, রবিবার

এনজিওর ঋণ শোধ করেও জেলে মা, বাড়িতে ৬ মাসের শিশু

Advertisement

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার শাহনাজ পারভীন নামের এক গৃহবধূকে এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধের পরও গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। মাকে কাছে না পেয়ে ছয় মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশুটি অনবরত কান্না করছে। আর এ ঘটনা হতবাক করেছে এলাকবাসীকে। গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় টিএমএসএস নামের এনজিওর করা মামলায় শাহনাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা এলাকার নুরুল আমিনের স্ত্রী।

গৃহবধুর স্বামী বলেন, ‘২০১৭ সালে আমাকে সহায়তার জন্য আমার স্ত্রী টিএমএসএস নামের ওই এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। যার মেয়াদান্তে একলাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। সমস্ত টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম ব্যবসায়। প্রত্যেক মাসে নিয়মিত ৯ হাজার ৫০০ টাকা করে কিস্তিও পরিশোধ করি। একসময় নানারকম আর্থিক সমস্যার সম্মুখিন হয়ে দুটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। তারপর এনজিওকর্মীর চাপে দুইমাস পরই ঋণ পরিশোধ করে আমার স্ত্রী।

গৃহবধুর স্বামী আরও বলেন, ‘তখন এনজিও থেকে আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়ন ও দেয়। তারপরও তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করেন। মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ শ্রীপুর থানা পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।’

কিন্তু সমস্যা হয়েছে আমার ছয় মাসের দুগ্ধপোষ্য শিশু ফাতেমার জন্য। শিশুটি তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। তার মাকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই তার মায়ের জন্য সে কান্নাকাটি করছে। শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম সরোয়ার এ বিষয়ে বলেন, ‘এনজিওর মামলায় আদালতের পরোয়ানা মূলে গ্রেফতার করা হয়েছে এই নারীকে। এবং আগামীকাল তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।’

এ বিষয়ে টিএমএসএস শ্রীপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, ‘বর্তমানে শাহনাজ পারভীন নামের আমাদের কোনো সদস্য নেই, কিন্তু পূর্বে ছিল। তখন আমি এ শাখায় ছিলাম না। তার কাছে আমাদের কোনো দেনা পাওনা নেই। তবে শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে কেন মামলা হল তা তিনি বলতে পারবেন না। এই শাখায় আগে যে দায়িত্বে ছিল বিষয়টি তার জানা থাকতে পারে।’

টিএমএসএস এর গাজীপুর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান বলেন, ‘নারীকে গ্রেপ্তার ও মামলা বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তিনি জরুরি ভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

শাহনাজ পারভীনের গ্রেপ্তার ও মামলার বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, মামলা ও আটকের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধের পরও মামলা এবং শিশু রেখে একজন নারীকে গ্রেপ্তার তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement