গত ২০২০-২১ অর্থবছরে নিবন্ধিত ৫৬ লাখ করদাতার মধ্যে ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৫ জন করদাতা আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল করেননি। শতাংশের হিসাবে যা ৫৬.৬০ শতাংশ।
অবশ্য ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে মোট ২৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৪৫ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। এনবিআরের তথ্যামতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার ৩৮৫ জন।
রিটার্ন দাখিলে আইনের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও বিশাল পরিমাণের করদাতা গত অর্থবছরে কেন তাদের আয়কর বিবরণী দাখিল করেননি, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামছে এনবিআর। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে এনবিআরের আয়কর বিভাগের আওতায় দেশের সব কর অঞ্চল থেকে কর শনাক্ত নম্বরধারী (টিআইএন) ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
নিয়ম অনুযায়ী একজন করদাতাকে প্রতি বছর নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রতি বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে হয়। সে বিষয়ে করদাতাদের সচেতন করতে প্রতি বছর নভেম্বর মাসে আয়কর মেলাসহ বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচি চালিয়ে আসছে এনবিআর। যদিও গতবছর করোনা মহামারির কারণে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। চলতি বছরেও মেলা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে অনলাইন সেবাসহ বিশেষ ব্যবস্থায় কর অঞ্চলগুলোতে সারাবছরই করসেবা অব্যাহত রয়েছে। তারপরও আয়কর রিটার্ন দাখিল কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে বাড়েনি। সেজন্য রিটার্ন দাখিল না করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে নোটিশ দেওয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি ভাবছে এনবিআর।
প্রথম পর্যায়ে এনবিআরের লক্ষ্য থাকবে ব্যবসায়ী হিসাবে যারা টিআইএন নিয়েছেন কিন্তু নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করছেন না তাদেরকে এর আওতায় আনা। সাধারণত অধিকাংশ চাকরিজীবী রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। কারণ তাদের বেতনের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন দাখিলের একটি অফিসিয়াল সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া মোটরযান ও নৌ-যান, সব ধরনের ট্রেড লাইসেন্স এবং ঠিকাদার তালিকাভুক্তি কিংবা নবায়নের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে করোনা মহামারির কারণে এ ধরনের কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তারপরও সীমিত জনবল দিয়ে যতটুকু করা সম্ভব এনবিআর করবে। কারণ করের আওতা বাড়ানো দরকার।