আমেরিকান প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের দৃঢ় ধারণা, কাবুলে দুটি নয়, একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেটি হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের ফটকের পাশে ঘটে। ব্যারন হোটেলের কাছে কোনো বিস্ফোরণ ঘটেনি।
ওয়াশিংটনে আমেরিকান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল উইলিয়াম টেলর সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাবুলে দুটি বিস্ফোরণ ঘটেছে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। একজন আত্মঘাতী হামলাকারী এ হামলা চালিয়েছে।’ বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়। এদিকে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তালেবান প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার হামলার পর সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি বলেছিলেন, দুটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে বিমানবন্দরের ফটক ‘আবে গেটের’ সামনে, অন্য হামলাটি হয়েছে অদূরেই ব্যারন হোটেলের পাশে। এ ব্যারন হোটেলে মূলত কাবুল ছাড়তে বিদেশি নাগরিকেরা জড়ো হন। এরপর বিমানবন্দরে যান।
এ দিকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা (আইএসকেপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, তাদের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী আমেরিকান সেনাবাহিনীর অনুবাদক ও দোসরদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কাবুল বিমানবন্দরের একটি ফটকের বাইরে বোমা হামলা হয়। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনাও রয়েছেন। হামলার নিন্দা জানিয়ে এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিলে বলেছেন, বিমানবন্দরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকে লক্ষ্য করে এ প্রাণঘাতী হামলার লক্ষ্য ছিল যত বেশি সম্ভব মানুষকে হত্যা করা। বেসামরিক, শিশু, নারী, মা-বাবা সবাইকে মারতে চেয়েছিল তারা।
এদিকে, কাবুলে আরও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পশ্চিমারা। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘আমরা এখনো মনে করি, আরও হামলার হুমকি রয়েছে।’ এদিকে রাশিয়াও বৃহস্পতিবার বলেছে, আফগানিস্তানে এখন সবাই বড় বিপদে রয়েছেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রতিবেশী অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসের ঝুঁকি প্রতিরোধে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দিনরাত কাজ করছে।
উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকত মিরজিইয়োয়েভ বলেছেন, তাঁর দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহযোগিতা চেয়ে প্রতিদিন তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তিনি।
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে প্রথম দফায় তাঁদের কথা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তালেবানের সঙ্গে প্রথম দফায় কথা বলেছি। সাড়ে তিন ঘণ্টা এই আলাপচারিতা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা এ রকম আরও আলোচনা করব।’ এরদোয়ান জানিয়েছেন, তালেবান কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনায় তুরস্কের সহায়তা চেয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো তাঁরা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।