গাজীপুরে ছেলে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আসাদুল ইসলাম নামে (৫০) এক বাবার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের বাহাদুরপুরের তুলশী ভিটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মো. আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আসাদুল ইসলাম গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার পাঁচ উলিপুর এলাকার গোলাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি কয়েক বছর ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাদুরপুর এলাকায় ফিরোজ মিয়ার বাসায় পরিবারসহ ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার চাকরি করতেন।
গাজীপুর সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৩ আগস্ট সকালে প্রতিবেশি আনন্দ (২২), শাহীন (২০), বাবলু (৪০) ও সেজু (২৪) আসাদুল ইসলামের ছেলে নয়নকে (১২) গাজীপুর সদরের আঙ্গুটিয়াচালা এলাকা দিয়ে তুরাগ নদীতে মাছ ধরতে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে নদী পার হতে গিয়ে নয়ন পানিতে ডুবে মারা যায়।
এ ঘটনায় ছেলেকে হত্যার অভিযোগ এনে আসাদুল প্রতিবেশী আলমগীর হোসেন, সুজনসহ কয়েকজনের কাছে আনন্দ, শাহীন ও বাবলুর বিচার চেয়ে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা বসার তারিখ দিলেও ওই যুবকরা হাজির না হওয়ায় আর সালিস হয়নি।
বুধবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের বাহাদুরপুরের তুলশী ভিটা এলাকায় প্রতিবেশী আলমগীর তার বাসায় আসাদুলকে ডেকে নিয়ে যান। পরে সেখানে ছেলের মৃত্যু নিয়ে এক সালিস বৈঠক বসে। একপর্যায়ে আসাদুলের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। আলমগীর হোসেন, মোজাম্মেল হক ও বাবু আসাদুলের ওপর চড়াও হন এবং তাকে মারধর করেন। পরে আসাদুল অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ওসি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহাল প্রতিবেদন করতে গিয়ে নিহত আসাদুলের দেহের কয়েক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সালিসের বিচারক মো. আলমগীর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোশারফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বিচার চাইতে গিয়ে যদি আসাদুল হামলায় মারা গিয়ে থাকে তাহলে সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। তবে আমি যতটুক শুনেছি ঘটনার আগে আসাদুল ইসলাম ও তার দুই ভাই বিবাদীদের বাসা থেকে ডেকে আনতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ওই ঘটনার পর আসাদুল অসুস্থ হয়ে পড়েন।