সাহসী কিছু একটা করে দেখানোটাই শখ ছিল। কিন্তু এমন সাহস দেখানোই কাল হলো ভারতের উত্তরপ্রদেশের গৃহবধূর। গুলিসহ বন্দুক নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে ‘খুলি উড়িয়ে’ ফেললেন তরুণী! এই ভয়ংকর ঘটনা যোগীরাজ্যের হারদুই অঞ্চলের। কিন্তু, প্রশ্ন জাগে কীভাবে চলল বন্দুকের গুলি?
জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশ লখনউয়ের হরদই অঞ্চলের বাসিন্দা রাধিকা গুপ্তা নামক একজন তরুণী থুতনিতে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে সেলফি তুলছিলেন। এক হাত মোবাইলের কিপ্যাডে থাকলেও ছবি তোলার সময় তার অপর হাত ছিল বন্দুকের ট্রিগারে। আর তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। অজানায়, অসাবধানতাবশত চাপ পড়ে যায় ট্রিগারে। আর তখন-ই গুলি বেরিয়ে সোজা গৃহবধূর মাথায়।
বন্দুকটি ছিল তরুণীর শ্বশুরের আর সেই বন্দুকটি নিয়ে সেলফি স্ট্যান্ট করছিলেন। ২৬ বছর বয়সী এই তরুণী প্রায়ই সেলফি তুলতে পছন্দ করতেন বলে জানা গেছে। কিন্তু সেলফি তোলার সময় সাহসী কিছু করতে গিয়েই দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হলো তরুণীর। গুলিটি পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বেরনো তার গলা ও ঘাড় ফুঁড়ে সোজা মাথার এফোঁড় ওফোঁড় করে বেরিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
তরুণীর শ্বশুর রাজেশ গুপ্তা জানান, তার ছেলে আকাশ গুপ্তার সঙ্গে রাধিকার বিয়ে হয় চলতি বছরের মে মাসে। বন্দুকটি তাদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য ১২-বোর একনলা বন্দুকটি থানায় জমা রাখতে হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার আকাশ গুপ্তা সেটি বাড়িতে ফেরত আনেন। বন্দুকটি বাড়ির দোতলায় রাখা ছিল। সেদিনই বিকাল ৪টার দিকে বাড়ির সদস্যরা গুলির শব্দ শুনতে পান। সে সময় রাধিকার ঘরে পৌঁছে দেখেন, তিনি রক্তে ভাসছেন। সেই একনলা বন্দুকটি তার হাতেই রয়েছে। সামনে তার মোবাইলটি পড়ে থাকতে দেখেন সকলেই। সেখানেই বন্দুকসহ রাধিকার সেলফি দেখা যায়। কারও বুঝতে কোনো অসুবিধা হয়নি, সেলফি তোলার কারসাজি করতে গিয়েই এই মর্মান্তিক পরিণতি।
পুলিশ বন্দুক ও মোবাইল ফোনটি দুটিই বাজেয়াপ্ত করেছে। এমনকি ইতোমধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সেগুলো পাঠানো হয়েছে। রাধিকা গুপ্তের ফোন থেকে পাওয়া ছবি মৃত্যুর কয়েক সেকেন্ড আগে তোলা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।
উক্ত ঘটনায় রাধিকার স্বামী আকাশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাধিকার স্বামী জানান, তার স্ত্রী বন্দুক দেখার পর থেকেই ব্যাপক উৎসাহিত ছিলেন। বন্দুক পাশে রেখে বেশ কয়েকটি ছবিও তুলেছিল সে। রাধিকার বাবা-মেয়ের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনই যৌতুকের জন্য রাধিকাকে খুন করেছে।