৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার

জিহ্বার রঙ দেখে রোগ চিনুন

Advertisement

জিহ্বা আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। জিহ্বা দ্বারা স্বাদ অনুভব করে থাকি। আবার আপনি সুস্থ না অসুস্থ তা বলে দেবে জিহ্বার রঙ। জিহ্বা রোগ নির্ণয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, জিহ্বা দেখে চিকিৎসকরা সহজেই রোগের লক্ষণ বুঝে ফেলেন। জিহ্বা নানা বর্ণ ধারণ করে রোগের ভিন্নতায় ।

তবে দিনের আলো জিহ্বার রঙ দেখার সবচেয়ে ভালো সময়। জিহ্বার রঙ পরীক্ষার ক্ষেত্রে উন্নত লাইটের আলো ব্যবহার করে যে কোনো সময় করা যায়। মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ফারুক হোসেন জিহ্বা দেহে রোগ নির্ণয়ের উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন । তবে জিহ্বার রঙ দেখতে হলে তা খাবার গ্রহণের কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর দেখতে হবে। সম্পূর্ণ নীল না হয়ে নীলাভ হতে পারে জিহ্বার রঙ। তবে সায়ানোসিসের ক্ষেত্রে জিহ্বা নীল বর্ণ ধারণ করতে পারে।

আর যদি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আপনার শরীরে অক্সিজেন দ্রুত কমে যায় তাহলে জিহ্বা এবং মুখের রঙ নীলাভ হতে পারে। তখন রোগীকে দ্রুত অক্সিজেন দিতে হবে।

তাছাড়া ফুসফুসের কিছু রোগ যেমন সিওপিডিতে জিহ্বার রঙ নীলাভ হতে পারে। আবার কখনো কখনো কিডনি রোগে জিহ্বার রঙ হালকা নীলাভ হতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিহ্বার রঙ ফ্যাকাশে দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাবের কারণে।

শরীরের পানিশূন্যতা থাকলে জিহ্বার রঙ সাদা দেখা যায়। ভাইরাস জ্বর ও ছত্রাক সংক্রমণেও এমন হতে পারে।
আবার জিহ্বার ওপর সাদা দাগ কিংবা সাদা আবরণ বলে দেয় ওরাল থ্রাশের কথা। ওরাল থ্রাশ হলো এক ধরনের ইস্ট সংক্রমণ। আবার একই অবস্থা দেখা যেতে পারে লিউকোপ্লাকিয়া হলেও।

তবে জিহ্বার ওপর ব্যথাযুক্ত বাম্প ক্যানকার মুখের আলসারের কারণে হতে পারে অথবা মুখের ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে। আবার যদি জিহ্বার রঙ নীল হয় তাহলে রোগীর শরীরে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া জমা হওয়ার কারণে জিহ্বার রঙ কালো দেখা দিতে পারে। আবার কখনো কখনো জেনেটিক কারণেও কালো রঙের জিহ্বা দেখা যেতে পারে। মাঝে মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা গ্যাস্ট্রিকের কিছু ওষুধ সেবনের পর জিহ্বার রঙ কালো হয়ে যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদে কিছু মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে জিহ্বার রঙ কালো হতে পারে। জিহ্বায় উজ্জ্বল লাল রঙ দেখা গেলে বুঝতে হবে ফলিক এসিড অথবা ভিটামিন বি১২-এর অভাব থাকতে পারে। তাছাড়াও স্কারলেট ফিবার এবং শিশুদের ক্ষেত্রে কাওয়াসাকি ডিজিজের ক্ষেত্রে জিহ্বার রঙ লাল হতে পারে। হৃদযন্ত্রের কোনো রোগের ক্ষেত্রে জিহ্বার রঙ লাল হতে পারে। আবার হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে জিহ্বার রঙ ধূসর হতে পারে। জিহ্বার উপরের ভাগে সাদা আবরণ বেশি হলে সংক্রামক রোগ হতে পারে। কখনো কখনো আবার কোনো বিষক্রিয়ার কারণে এমন হতে পারে।

পাকস্থলী এবং লিভারের কোনো সমস্যা হলে জিহ্বার রঙ হলুদ অথবা হলুদাভ হয়ে থাকে। গ্যাস্ট্রাইটিস এবং পেপটিক আলসারের লক্ষণ জিহ্বার ওপর ধূসর আস্তরণ। ফুসফুসের কোনো রোগের লক্ষণ হিসাবে দেখা দিতে পারে জিহ্বার ওপর বাদামি রঙের আস্তরণ।

যদি হজমের সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে জিহ্বার ওপর হলুদ আস্তরণ পড়তে পারে। কিন্তু জিহ্বার রঙ যেমনই হোক না কেন, তা দেখেই কিন্তু পুরোপুরি একটি রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। যে কোনো রোগ নির্ণয় করতে হলে রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে করতে হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement