আমানতকারীদের জমানো টাকা নিরাপদ রাখতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের বিদেশযাত্রায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি বিদেশে যেতে পারবেন না। অনুমতি পেলেই কেবল তাঁরা বিদেশে যেতে পারবেন।
ব্যাংকের এমডিদেরও বিদেশে যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। শুধু অনুমতি নয়, কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, সঙ্গী কে—এসব তথ্যও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ গতকাল সোমবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিরা দাপ্তরিক কোনো কাজে কিংবা ব্যক্তিগত ছুটিতে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান করলে তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে সার্বিক গতিশীলতা হ্রাসের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনাগত ঝুঁকিসহ আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে, যা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের দীর্ঘ সময়ের জন্য দেশের বাইরে অবস্থান যতদূর সম্ভব পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি বাংলাদেশের বাইরে ভ্রমণ আবশ্যকীয় হলে দেশের বাইরে গমনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।
ভ্রমণের আগে ভ্রমণের কারণ, খরচ, কোথায় অবস্থান তা জানাতে হবে। ১৫ দিন আগে অনুমোদনের জন্য কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র পাঠাতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। এ ধরনের অনুমোদন গ্রহণের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো আবেদনপত্রের সঙ্গে ভ্রমণের ১৫ কর্মদিবস আগে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের কপিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জমা দিতে হবে।
কোনো এমডির দেশের বাইরে ভ্রমণের ব্যাপারে দেওয়া আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন করা হলে তাতে অনুপস্থিতকালে তাঁর জায়গায় যিনি দায়িত্ব পালন করবেন, সেই কর্মকর্তাদের নাম, পদবি, দাপ্তরিক ফোন, মুঠোফোন নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয় এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগকে অবহিত করতে হবে। ভ্রমণের আগে ভ্রমণের কারণ, খরচ, কোথায় অবস্থান তা জানাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমডিরা হুটহাট করেই বিদেশে চলে যাচ্ছেন। অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনেও তাঁদের পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকের বিরুদ্ধে বিদেশে আবাস গড়ারও অভিযোগ মিলছে। এসব ব্যক্তির কাছে আমানতকারীদের টাকা নিরাপদ নয়। এক্ষেত্রে পিকে হালদারের মতো খারাপ অভিজ্ঞতাও রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে। অনেকেই গ্রাহকদের আমানত লুটে নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বা জমানোর অপচেষ্টা করছেন। এ জন্য একধরনের বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।