দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঈদ পরবর্তী কঠোরতম বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনে অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে সব। এবারের লকডাউন আগের লকডাউনের চেয়ে কঠোর হওয়ার কথা থাকলেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন চেকপোস্টে দেখা গেছে ঢিলেঢালা ভাব। ঢাকার বাইরে থেকে আজও মানুষকে ঢুকতে দেখা গেছে নানান উপায়ে।
আজ থেকে ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলা থাকায় ঢাকার বাসিন্দাদের অনেকে ব্যাংকের অজুহাতেও বেরিয়েছেন। চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ সদস্য থাকলেও খুব একটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি কাউকে। তবে কোথাও কোথাও অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ সকালে রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, জিগাতলা, সিটি কলেজ মোড়, রাসেল স্কয়ার মোড় এবং গণভবন চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন ঠিকই, তবে রাস্তায় চলছে বিভিন্ন গাড়ি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যক্তিগত গাড়িগুলোতে চিকিৎসক, নার্স, ব্যাংকের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলাচল করছেন। আবার বেশিরভাগ ওষুধ কোম্পানির কর্মীরা মোটরসাইকেলে চলাচল করছেন। আবার কেউ কেউ রাস্তায় বের হয়ে বলছেন, হাসপাতালে রোগীকে খাবার দিতে যাচ্ছেন অথবা রোগী দেখতে যাচ্ছেন। আবার কেউ বের হয়েছেন ব্যাংকের উদ্দেশ্যে। তারা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে যার যার গন্তেব্যে পৌঁছাচ্ছেন।
অনেকে আবার যানবাহন না পেয়ে হেঁটেও রওয়ানা হয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশে। যানবাহেনের সংখ্যা কম থাকায় সড়কে রিকশাওয়ালাদের দাপটও ছিল চোখে পড়ার মতো। ত্রিশ টাকার ভাড়া তিনশ টাকাও হেঁকেছে অনেকে রিকশাওয়ালা। বাধ্য হয়ে জরুরি কাজে বের হয়ে অনেকে তাই হেঁটেই গেছেন গন্তব্যে। পরিচিত অন্য ব্যক্তির সঙ্গে ভাড়া ভাগাভাগি করেও রিকশায় উঠেছেন অনেকে। রাজধানীর বিভিন্ন বাস ষ্টেশনে দেখা গেছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকদেরও অপেক্ষা করতে। তারা গলিপথে নানান কায়দায় চেকপোস্ট এড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করছেন।
এদিকে, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে র্যাব-৩। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতটি পরিচালনা করা হয়। আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শাহবাগ মোড়ে র্যাবের এই ভ্রাম্যমাণ আদালত শুরু হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, রাস্তায় যারা বের হয়েছেন সবাইকেই চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। যারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারছেন না তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। এই অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান রয়েছে।
শনিবার (২৪ জুলাই) বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে সারাদেশে ২১২ জনকে জরিমানা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিন জরিমানা করা হয় মোট ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।