আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন, তারাও রাজনীতি করে জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়ার কল্যাণে এমপি-মন্ত্রী হয়েছিলেন। যারা স্বাধীনতা অস্বীকার করেন, তাদের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আয়োজনে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি নিয়ে এটি করা হয়েছিল। সেসব ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের যে বিচার হয়েছে, সেখানে- সাক্ষীরা কি বলেছেন, আসামিরা কী জবানবন্দি দিয়েছেন, কার সঙ্গে কী নিয়ে মিটিং হয়েছে, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কার কখন মিটিং হয়েছে, জিয়াউর রহমান কীভাবে তাতে সায় দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, সেগুলো সেখানে বর্ণিত রয়েছে। অনেক বই-পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কায়সার হামিদ আমাদের ফুটবলার, তার বাবা মিস্টার হামিদ। তিনি জিয়াউর রহমানের কোর্সমেট ছিলেন। তিনি বইয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। সচক্ষে দেখা ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তা লিখেছেন।
কয়েকজন সেনা অফিসার বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন। সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হলে কেউ সেনানিবাসে প্রবেশ করতে পারেন না। কিন্তু তারা সেনানিবাসে গিয়ে টেনিস খেলতেন, ব্যাডমিন্টন খেলতেন। তারা টেনিস খেলতে গিয়ে ষড়যন্ত্র করতেন। আজ এসব প্রকাশিত হচ্ছে। একটি কমিশন গঠন করে হত্যাকাণ্ডের সবিস্তর জাতির সামনে উন্মোচন করা প্রয়োজন।
সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের ওপর জোর দিয়ে সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগ না থাকলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হতো না। ইতিহাসের সত্য জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য কমিশনটি গঠন করতে হবে। অন্য সব কাজ চলছে, এ কমিশনের কাজ বন্ধ থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এ কমিশন না করে গেলে আগামীতে নতুন প্রজন্মের কাছে ভিন্ন তথ্য আসতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আগস্ট মাস এলেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তের কমিশন গঠনের কথা আসে। আগস্ট শেষ হয়ে গেলে কমিশন আর হয় না। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, যারা নেপথ্যে ছিলেন, তাদের সবার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাবেক সভাপতি সাইফুল আলমসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা।