আফগানিস্তানে যারা তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের সবাইকে ক্ষমা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
কাবুল নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানে সংবাদ সম্মেলন করছে তালেবান। দলটির মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখলেও এবারই প্রথম প্রকাশ্যে হাজির হয়েছেন। এতে তিনি সংবাদমাধ্যমকে তাদের বিরুদ্ধে না যাওয়ার অনুরোধ করেন।
জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর মধ্যে থেকে মিডিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মিডিয়ার কার্যক্রমের মধ্যে ইসলামিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কিছু করা উচিত হবে না।’ তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার উচিত হবে না আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করা। তাদের উচিত দেশের ঐক্যের জন্য কাজ করা।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ২০ বছরের সংগ্রামের পর আমরা দেশকে মুক্ত করেছি এবং বিদেশিদের তাড়িয়ে দিয়েছি। এটা পুরো জাতির জন্য গর্বের মুহূর্ত। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আফগানিস্তানে আর সহিংসতা-যুদ্ধক্ষেত্র থাকবে না। যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের সবাইকে আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। শত্রুতা শেষ হয়ে গেছে। আমরা কোনো বিদেশি কিংবা অভ্যন্তরীণ শত্রু চাই না।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, আগের সরকার এতটা অযোগ্য ছিল যে তাদের সেনাবাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছুই করতে পারেনি। আমাদের কিছু করতে হবে। আর তাই আমাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের কাবুলে প্রবেশ করতে হয়েছিল।
তালেবানের ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক কাঠামোর ভেতরে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যখন গণমাধ্যমের বিষয় আসবে তখন সেখানে এমন কোনো কিছুই করা যাবে না যা আমাদের ইসলামিক মূল্যবোধের বিরোধী।’
জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনো সমস্যা করতে চাই না। আমাদের ধর্মীয় নীতি অনুসারে কাজ করার অধিকার আমাদের আছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পন্থা, নিয়ম-কানুন আছে। অন্যদের মতো আমাদের (আফগানদের) মূল্যবোধ অনুযায়ী তাদের নিজস্ব নিয়ম-কানুন থাকার অধিকার আছে। আমরা শরিয়াহ আইনের অধীনে নারীদের অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।’
নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের নীতি নিয়ে এসব জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা (নারীরা) আমাদের সঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে কোনো বৈষম্য থাকবে না।’