নীলফামারীতে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। শুক্রবার সকাল থেকে এ নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যদিও বিকাল ৩টার পর পানি পাঁচ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো। শুক্রবার সকাল থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১০ হাজারের বেশি পরিবার। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
নীলফামারী জেলার ডিমলার ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা হলো ৫২.৬০ সেন্টিমিটার। বিকাল ৩টার পর পানি কিছুটা কমেছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একই লেভেলে তিস্তার পানি প্রবাহিত হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা ও লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডিমলা উপজেলার কিসামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চরখড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশপুকুর, ঝুনাগাছ চাপানির ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, ভেন্ডাবাড়ি প্লাবিত হয়।
এদিকে, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার মানুষজন গরু ছাগল নিয়ে নিরাপদে সরে গেছেন। এতে প্রায় ১০ হাজারের বেশি পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
তিস্তার চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি কোমর থেকে হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। কারও বাড়িতে রান্না করে খাবার তৈরির উপায় নেই। জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাবার বিতরণ প্রয়োজন জানিয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদৌলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে তিস্তা অববাহিকা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সতর্ক রয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যা কবলিত পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’