আফগানিস্তানের কিছু নাগরিককে সাময়িক আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা অনুরোধকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের আমাদের ওপর যথেষ্ঠ আস্থা আছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এটাকে দুইভাবে দেখছি। একটা হচ্ছে, ইতিবাচক। আমেরিকান প্রশাসনের আমাদের ওপর যথেষ্ঠ আস্থা আছে। তারা আমাদের মূল্যায়ন করে। এ কারণে তারা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কাউকে নেওয়ার মতো অবস্থা নেই। সে কারণে আমরা নতুন কোনো লোক নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাদের এটা বলেছি। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যে আমাদের অনুরোধ করেছে এটা হচ্ছে প্লাস পয়েন্ট।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে অবশ্যই তাদের রিকোয়েস্ট (অনুরোধ) বিবেচনা করে দেখতাম। কিন্তু বাস্তবে আমাদের সেই অবস্থান নেই। কিন্তু তারা যে আমাদের রিকোয়েস্ট করেছে এটাই প্লাস পয়েন্ট।’
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন প্রস্তাব পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রবিবার রাতেই রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে জবাব পাঠায় ঢাকা।
সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার একই প্রস্তাব নিয়ে আসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এ নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকও করেন মিলার। সেখানে মিলারকে সচিব সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের পক্ষে আর একটি লোককেও নেওয়া সম্ভব হবে না।
ড. মোমেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আমাদের দেশে তো বহু রোহিঙ্গা রেখেছি, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সাহায্যও করছে। তারা বলেছে, তাদের অনেক বন্ধু আফগানিস্তানে আছে, তারা তাদের অন্য দেশে সরাতে চায়। এটা খুব জরুরি ইস্যু। বাংলাদেশ যদি ওদের স্বল্পদিনের জন্য আশ্রয় দেয় তারা খুব খুশি হবে। কিন্তু আমাদেরতো সেই অবস্থা নাই।’
তালেবানকে সরকারকে বাংলাদেশ স্বীকৃতি দেবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সরকারের। জনগণের ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে যদি কোনো সরকার গঠিত হয় তাদের আমরা সমর্থন দেব, পযবেক্ষন করছি। তারা যদি আমাদের কোনো সাহায্য সহযোগিতা চায় আমরা যতদূর পারি দেখব। আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে, আইটি খাতে, কৃষি খাতসহ অনেক ক্ষেত্রেই যথেষ্ঠ সক্ষমতা অর্জন করেছি। তারা যদি এসব সেক্টরে সহযোগিতা চায় আমরা দেব। আমরা সার্কভুক্ত সব দেশকে সহযোগিতা করতে রাজি আছি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সন্ত্রাসীদের মূল উৎপাটনে কাজ করছি। এর আগে আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিয়ে যারা দেশে এসেছে তাদের উৎখাত করেছি। আমরা সেই খপ্পরে আর পড়তে চাই না। আমরা দেশবাসীকে বলি, আপনারা ভুল পথে আর যাবেন না।’