অস্ট্রেলিয়ার পার্থের বিখ্যাত ওয়াকা স্টেডিয়ামে এক গৌরবান্বিত সন্ধ্যা উপহার দিল বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিচালিত স্পোর্টস ক্লাব পিবিসি (পার্থ বেঙ্গল ক্লাব)। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিনিধিদের নিয়ে এক ছাদের নিচে হাজির হয় পিবিসি। মূলত ক্লাবটির ১০ বছরপূর্তির মাইলফলককে স্মরণীয় করে রাখতে এই আয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণির স্টেডিয়ামের নিজস্ব হলরুমে এই অনুষ্ঠান মাথা উঁচু করে বাংলাদেশিদের।
(১২ জুন) রোববার সন্ধ্যা গড়াতেই পর্দা উঠে অনুষ্ঠানটির। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বসহ ক্রিকেটপ্রেমীরা অংশ নেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্লাবটির বিভিন্ন ইভেন্টে নাম লেখানো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রিকেটাররা হাজির হন সশরীরে। চাকচিক্য সাজসজ্জায় বিলাসী ভেন্যুতে পরিণত হয় আয়োজিত স্থল।
শুরুতে পিবিসির প্রেসিডেন্ট মনসুর মানাফ স্বাগত বক্তব্য দিয়ে সবাইকে বরণ করে নেন। তারপর ওয়াকার প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টিনা ম্যাথিউস বাংলাদেশিদের উদ্যোগে পিবিসির এই যাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারপর মঞ্চে আসেন ওয়াকার ব্যবস্থাপকরা, ক্রেস্ট তুলে দেন যোগ্যতার বিচারে এগিয়ে থাকা স্পোর্টসম্যানদের হাতে। গালা ইভেন্টটিতে পার্থ বেঙ্গল ক্লাবের গুণকীর্তন করেন অতিথি বক্তারা। অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন মাইকেল ব্রড।
অনুষ্ঠানে অতিথির তালিকায় দেখা যায় জন ইনভেরারিটি (অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক), রবিন স্মিথ (সাবেক ক্রিকেটার ইংল্যান্ড জাতীয় দল), গ্রিমী ওড (সাবেক ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল) সহ বিভিন্ন দেশের সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের। আরও অংশ নেন আইসিসির ফ্যান ম্যানেজার মাইকেল হেনসি ও আইসিসি প্রতিনিধি উইল ওয়াটসন। এছাড়া সিটি অব গজনেল’র মেয়র ও বাংলাদেশি গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মাইকেল হেনসি জানান, আজকের আয়োজন বাংলাদেশিদের জন্য অনন্ত মর্যাদাকর, এই ইভেন্ট প্রমাণ করে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে এগিয়ে যাচ্ছে, পিবিসির জন্য শুভ কামনা। ক্রিকেট দিয়ে তাদের অবদান আরও বাড়বে প্রত্যাশা করি।
ফটো বুথের নান্দনিক উপস্থাপন কাছে টানে ফটো প্রেমীদের, সেই সঙ্গে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি অনুষ্ঠানটিকে আরও আকর্ষিত করে তোলে। বিশ্বকাপকে ছুঁয়ে দিতে উৎসাহ উদ্দীপনায় মাতেন উপস্থিতরা। আয়োজনটিকে আনন্দদায়ক করে তুলতে সাংস্কৃতিক পর্বের সংযোজন রাখা হয়। ভারতীয় ও নেপালি নাচ উপভোগের পর চিরচেনা বাংলা গানের নৃত্য ঝংকার দেখা যায়, শৈল্পিক পরিবেশনাগুলো আদায় করে ব্যাপক করতালি।
পিবিসির প্রধান মনসুর মানাফ জানান, পিবিসির কার্যক্রমকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় আন্তঃরাজ্যগুলোর বাংলাদেশিদের নিয়ে এডিলেডে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে আইসিসি থাকার আশ্বাস দিয়েছে। আমরা পিবিসিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কল্যাণে কাজে করে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে র্যাফেল ড্র ও ডিনারের আয়োজন রাখা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন ড. তন্ময় দেবনাথ। তিনি জানান, আমরা চেষ্টা করেছি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে ঠাঁই পাওয়া এই অনুষ্ঠানটিকে চমকপ্রদ করে তুলতে। অনুষ্ঠানের নেপথ্যে আরও ভূমিকা রাখেন পিবিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী জাবেদ উপলসহ পিবিসির অন্যান্য সদস্যরা।