মহামারি করোনাভাইরাসে মারা গেছেন পিতা। ভয়ে মরদেহ দাফন তো দূরের কথা এক পলক দেখতেও আসেনি সন্তানরা। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা এগিয়ে এসেছেন মরদেহ দাফন-কাফনে। মর্মস্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে চাপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায়।
জানা গেছে, নাচোল উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহাব (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রাণঘাতী করোনায় মারা যাওয়ায় তাকে শেষ দেখা দেখতে আসেননি সন্তানরা। মরদেহ দাফন তো দূরের কথা করোনার ভয়ে কাছেও আসেননি প্রতিবেশীরা। অবশেষে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা আব্দুল ওয়াহাবের মরদেহ দাফন করেছেন। শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান আব্দুল ওয়াহাব।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার (২৮ জুলাই) আব্দুল ওয়াহাবের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। বাড়িতে জায়গা না দিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয় ছেলে মো. ভদু ও মেয়ে শিউলি খাতুন। করোনা পজিটিভ হয়ে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন আব্দুল ওয়াহাব।
এর দুই দিন পর শুক্রবার সকালে মারা যান বৃদ্ধ আব্দুল ওয়াহাব। মারা যাওয়ার পর বোনের বাড়িতে মরদেহ পড়ে থাকলেও ছেলে-মেয়ে, প্রতিবেশী কেউ দেখতে বা লাশ দাফনে এগিয়ে আসেনি। খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নাচোল মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সদস্যরা।
নাচোল মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি শাকিল রেজা বলেন, খবর পাওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানাই। পরে নাচোল মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সদস্যরা নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া সুরক্ষা পোশাক পরে কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করেন। বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলার মোমিনপাড়া গোরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।