একটি কুমিরের ভয়ে আতঙ্কে ঘুর হারাম ফরিদপুরের সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দাদের। গত শনিবার সকালে এই গ্রামের জলাধারে হঠাৎ কুমিরটি দেখতে পান এলাকাবাসী। এরপর মাইকিং করে জনসাধারণকে ওই জলাশয়ে না নামার জন্য সতর্ক করা হয়। তবে কুমির দেখতে আশপাশের এলাকার উৎসুক জনতা জলাধারে ভিড় করছেন।
ফরিদপুর নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকায় সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামে রয়েছে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০০ ফুট প্রস্থের একটি জলাধার। বলা হচ্ছে, সেখানে এসে আটকে পড়েছে এক কুমির। আর তার ভয়েই আতঙ্ক নেমে এসেছে গ্রামজুড়ে। এ আতঙ্ক আরও তুঙ্গে তুলেছে মাইকিং।
গত শনিবার সকালে ওই কুমিরটি দেখা দেয়। এরপরই এলাকায় মাইকিং করে সর্বসাধারণকে জলাশয়ে না নামার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে, জলাধারে কুমিরটি এসে আস্তানা গেড়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গত রবিবার সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের জেলে হজরত মিয়া পদ্মা নদী থেকে আনুমানিক চার কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরেন। তাজা রাখার জন্য মাছটির মুখে দড়ি বেঁধে জলাশয়ের মধ্যে চুবিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মাছটি তুলে আনার জন্য দড়ি ধরে টান দিলে কুমিরটি দেখতে পান।
এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, পদ্মা নদী থেকে একটি সরু চ্যানেল ওই জলাধারের কাছে গেছে। এর মধ্যে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় চ্যানেলের পানি শুকিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে ওই কুমিরটি একটি মেছো কুমির। কোনো মাছ তাড়া করতে করতে এ জলাধারে এসে আটকা পড়েছে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটির আনুমানিক দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট। কুমিরটি দেখা যাওয়ার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বন বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর সদরের বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, যে জলাধারে ওই কুমিরটি অবস্থান করছে সেটি ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর। ওই জলাধার থেকে এ কুমিরটি ধরা কষ্টসাধ্য। তিনি বলেন, যে চ্যানেল দিয়ে ওই কুমিরটি ওই জলাধারে ঢুকেছে সে চ্যানেলের মুখে মুরগি হাঁস বেঁধে রেখে কুমিরকে প্রলুব্ধ করে বের করে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুই/তিন দিনের মধ্যে এ উদ্যোগ সফল না হলে বিষয়টি ‘বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ’-এর খুলনা কার্যালয়কে জানানো হবে, যাতে এ কুমিরটিকে এ জলাধার থেকে সরিয়ে বড় কোনো নদীতে ছেড়ে দেওয়া যায়।