গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) ফেলন ডাল চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে। তবে এই ফেলন ডাল সাধারণত শীতকালে পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে চাষ হয়ে থাকে। বাপার্ড গ্রীষ্মকালে কৃষি খামারের অনাবাদি ২০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এ ডালের চাষ করে সফল হয়েছে।
জানা গোছে বিমান থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে এই ডাল ফেলা হয়েছিল ১৯৭০ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়। সে থেকে এই ডালের নাম ফেলন ডাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাপার্ডের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তোজাম্মেল হক।
তিনি আরও বলেন আমরা বাপার্ডের কৃষি খামারে ২০ শতক জমিতে গত ৩ মাস আগে পরীক্ষামূলকভাবে এই ডালের চাষ করি। তবে ৩ মাসের মধ্যেই এখন এই ডাল গাছে ফলন ধরেছে। ফেলন ডালে ৫৪ থেকে ৫৮ ভাগ কাবোর্হাইড্রেট ও ২৫ থেকে ৩৫ ভাগ প্রোটিন রয়েছে। তা মানুষের ক্ষুধা নিবারণে সহায়তা করে।
তাছাড়াও এ ডাল গাছের শিকড় বাকড়ে অনেক মডিউল বা গুটি থাকায় মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমি থেকে এ ডাল উত্তোলনের পরে সে জমিতে অন্য ফসলের চাষ করলে সে ফসলেরও ভালো ফলন হবে।
আবার বাপার্ডের পরিচালক কৃষিবিদ মো. মাহমুদুন্নবী বলেন, শীতকালে উৎপাদিত ফেলন ডাল গ্রীষ্মকালে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে আমরা সফল হয়েছি। ফেলন ডাল খাদ্যের অন্যতম উপাদান প্রাণিজ আমিষের পাশাপাশি জনগণের উদ্ভিজ আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এদিক বিবেচনা করে আমাদের ফেলন ডাল চাষ করা উচিত। আবার এ ডাল চাষে খরচ অনেক কম। আমরা আশাবাদী দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষদের এ ডালের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে।
অন্যদি বাপার্ডের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শেখ মো. মনিরুজ্জামান তিনি বলেন, শুনেছি ফেলন ডাল শুধু শীতকালে উপকূলীয় অঞ্চলে চাষাবাদ করা হয়। এখন দেখলাম এটি গ্রীষ্মকালেও দেশের মধ্যে অঞ্চলে চাষাবাদ করা সম্ভব। ফেলন ডাল বাড়ির আঙ্গিনায় ও বিভিন্ন সড়কের পাশে চাষ করা যেতে পারে।
এভাবে ফেলন ডাল চাষ করলে দেশের দরিদ্র মানুষের উপকার হবে পাশাপাশি দারিদ্রতা দূর হবে। প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে দেশের দারিদ্রতা দূরীকরণে কাজ করাই হচ্ছে বাপার্ডের কাজ। তবে গ্রীষ্মকালে ফেলন ডাল চাষ আমাদের গবেষণারই একটি অংশ।