বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আত্মস্বীকৃত খুনিরা ঘোষণা করে ‘বাংলাদেশ এখন আর ধর্মনিরপেক্ষ দেশ নয় বরং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে পরিচিত হবে।’ এর ফলে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিধারা পালটে যায় এবং দেশ এক দীর্ঘ দুঃশাসনের কালে আবর্তিত হতে থাকে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জেনারেল জিয়ার সঙ্গে দেখা করে মেজর ফারুক। ১৯৭৬ সালের ২ আগস্ট যুক্তরাজ্যের আই টিভিতে প্রচারিত গ্রানাডা টেলিভিশনের ‘ওয়ার্ল্ড ইন অ্যাকশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ্যন্থনী ম্যাসকারেনহাসকে দেওয়া সাক্ষাতকারে মেজর ফারুক বলেন, প্রথমেই আমরা জেনারেল জিয়াকে উপযুক্ত ব্যক্তি বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যাবেলা তার সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করি। জেনারেল জিয়া বলেন, আমি একজন সিনিয়র অফিসার; আমি এ ধরনের ব্যাপারে জড়িত হতে পারি না। তোমরা জুনিয়র অফিসাররা যদি এটা করতে চাও, তাহলে এগিয়ে যাও।’
জিয়ার সাথে কি কথা হয়েছিল এ প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেন, ‘সরাসরি না বলে জিয়াকে আমি কথাটা ঘুরিয়ে বলি। আমি বললাম, দুর্নীতিতে দেশ ভরে গেছে, দেশের জন্য একটি পরিবর্তন দরকার।’ এটুকু বলতেই জিয়া বলেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ চলো আমরা বাইরে লনে গিয়ে বসে আলাপ করি। সেখানে আমি তাকে জানাই যে, আমরা জুনিয়র অফিসাররা পরিবর্তন আনার সম্পর্কে পরিকল্পনা তৈরি করেছি। সব শুনে তিনি এই উক্তি করেছিলেন।
এই আলোচনা ও প্রস্তাব পেশ করার পরও তৎকালীন সামরিক বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান মেজর ফারুকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে খবর পাঠাননি বা গ্রেফতার করেননি। এ প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, না, তিনি তার এডিসিকে শুধু এরপর আমাকে সাক্ষাতের অনুমতি যেন আর না দেওয়া হয় সে নির্দেশ দেন।
আগামীকাল : বঙ্গবন্ধু হত্যার চক্রান্ত জানতেন মোশতাক।