বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে নেত্রকোণায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই শিশুর তাৎক্ষণিক মুক্তি চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে লিখিত আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।
বুধবার হাইকোর্টের রিট এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম বরাবর চিঠিটি পাঠান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির। চিঠিতে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ও উচ্চ আদালতের রায়ের অনুলিপি সংযুক্ত আছে।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, ৪ঠা আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে দণ্ড ‘ শিরোনামে একটি খবর। বিষয়টি পড়ে আমার মনে হয়েছে খুবই স্পর্শকাতর। কারণ নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলা ভূমি কমিশনার সুলতানা রাজিয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে দুই শিশুকে একমাস আটকাদেশ দেন। কিন্তু শিশু আইনের অধীন মোবাইল কোর্টের কোন এখতিয়ার নেই। অত্র আটকাদেশ এখতিয়ার বহির্ভূত। এই বিষয়ে The State vs. Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs, Government of Bangladesh and Ors, reported in 72 DLR 700-এর মামলায় সিদ্ধান্তও রয়েছে বলে উল্লেখিত হয়েছে সেই চিঠিতে।
এছাড়াও আবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৭২ সালের সুপ্রিম কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) রুলসের (সংশোধিত-২০১২ পর্যন্ত) ১১ক অধ্যায়ের ১০ বিধি মোতাবেক এই চিঠি সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনযায়ী আবেদন হিসেবে বিবেচনা করে পত্রিকার প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে উল্লেখিত শিশুদের তাৎক্ষণিক মুক্তির আদেশ দিতে আদালতের একান্ত মর্জি হয়।
চিঠিতে আইনজীবী শিশির মনির জানান যে ছাত্রাবস্থায় পড়েছেন যে একটি ফোনকলও এফ আই আর-এ রূপান্তরিত হয়েছে। এছাড়াও হাজতী আসামীদের পত্র কখনো জেল আপিল হিসেবে গণ্য হয়। এছাড়াও প্ত্রিকার প্রতিবেদন দেখেও অনেকসময় স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এসব দেখেই উৎসাহী হয়ে পত্র লিখেছেন আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে, আটপাড়াস্থা শিশু দুটির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে মেয়েটি বিয়ে করতে চায়। এ জন্যে গত সপ্তাহ থেকে মেয়েটি ছেলেটির বাড়ির সামনে অবস্থান নিলে নিরুপায় হয়ে রোববার উভয় পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করেন। এ খবর পেয়ে ভূমি কমিশনার সুলতানা রাজিয়া তাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তার কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী একমাসের আটকাদেশ দিয়ে শিশু-কিশোর উন্নয়নকেন্দ্রে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
বিয়ের সময় নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়েটির বয়স পনেরো বছর। ছেলেটিও একই বয়সের। শিশুদুটি গত মঙ্গলবার পর্যন্ত নেত্রকোণা জেলা কারাগারে ছিলো।