কারখানার ভেতরে থাকা কর্মীদের হয়রানি না করতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে নিটওয়্যার গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ। সংগঠনটি বলছে, সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধে তারা কারখানায় উৎপাদন চালু রাখছেন না। কিন্তু কারখানার নিরাপত্তা ও সংরক্ষণের স্বার্থে নিয়োজিত কর্মী ও উদ্যোক্তাদের কারখানায় অবস্থান করতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কোনো প্রকার হয়রানি না করার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গতকাল সোমবার ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কুমিল্লা ও ফেনীর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছে বিকেএমইএ।
সংগঠনের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যদি কোনো শিল্প কারখানা খোলা রেখে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখে সেক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে এতে বিকেএমইএর কোনো প্রকার আপত্তি নেই। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কারখানার অভ্যন্তরে কিছু সংখ্যক জনবল অথবা উদ্যোক্তারা অবস্থান করলে তাদের কোনো অবস্থায় হয়রানি না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
চিঠিতে বলা হয়, সরকার ঘোষিত চলমান লকডাউনের প্রতি বিকেএমইএর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, সবার আগে মানুষের জীবন এবং রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা। তাই লকডাউন বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ প্রতিপালনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এ বিষয়ে অবহিত করা প্রয়োজন যে, নিট শিল্প কারখানাগুলো বিরাট পুঁজিনির্ভর ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ রফতানিমুখী শিল্প। চলমান লকডাউনে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এ শিল্পে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে এতো বড় বড় কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে কারখানার অভ্যন্তরে বাধ্যতামূলকভাবে স্বল্পসংখ্যক লোকবল নিয়োজিত রাখতে হয়। কারখানা বন্ধ থাকার সময় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাপ বেশি থাকে। তার উপর বর্তমানে আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম। ফলে প্রতিনিয়ত গ্যাস ও বিদ্যুতের নিয়ন্ত্রণ সুইচ বোর্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়, অন্যথায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। ফলে এ বিষয়গুলো মনিটরিং করার জন্যও বর্তমান সময়ে কারখানায় স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়োজিত রাখতে হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত মেশিনারিজগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এগুলোর নিয়মিত চেকিং প্রয়োজন। অন্যথায় মেশিন চালু না থাকলে যেকোনো সময় তা অকেজো হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের সংবেদনশীল মেশিনগুলোর মধ্যে রয়েছে, বয়লার, বৈদ্যুতিক মোটর, গ্যাস জেনারেটর ইত্যাদি। এসব মেশিন কোনো কারণে অকেজো হয়ে গেলে পুনরায় মেরামত করতে বিশাল অংকের টাকার প্রয়োজন হয়।
তাই চলমান লকডাউনে এসব দামি মেশিনারিজগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের জন্য কারখানায় স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়োজিত রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মালিক পক্ষ কারখানা পরিষ্কার, ভবনের রং ও রিপেয়ারিং করার সুযোগ পান। এই কাজ পরিচালনার জন্যও কিছুসংখ্যক লোকবল প্রয়োজন হয়। যার সঙ্গে উৎপাদনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
কিন্তু এসব কাজে নিয়োজিত জনবলকে কারখানায় যেতে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মীদের কারখানায় অবস্থান ও যাতায়াতে যেন কোনো হয়রানি করা না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায় বিকেএমইএ।