প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উর্ধমূখী সংক্রমণ ঠেকাতে টানা ১৯ দিন পর শিথিল হলো বিধিনিষেধ। এখন থেকে রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। এছাড়া আজ বুধবার সকাল থেকে চালু হবে সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যদিও গতকালও দেশে সরকারি হিসেবে রেকর্ড ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। তবে মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে ৮টি শর্তে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার।
করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে গত ১ জুলাই থেকে এই দফায় কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। তবে ঈদ উপলক্ষে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়। পরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়।
বিধিনিষেধ বাড়ানো নিয়ে গত ৫ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৫ আগস্ট রাত ১২টা থেকে ১০ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ আরোপের সময়সীমা বাড়ানো হল। এরপর সর্বশেষ গত ৮ আগস্ট বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে বিধিনিষেধ শিথিল কার্যকর হয়েছে।
সর্বশেষ জারি করা প্রজ্ঞাপনে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনাগুলো হলো-
১. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। (১১ আগস্ট থেকে ভার্চুয়ালি হাইকোর্টের সবগুলো বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশ ক্রমে রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে)
৩. সড়ক রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন-যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল, মার্কেট ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে।
৫. সব ধরনের শিল্প-কারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দফতর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।