৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার

মাংস খেয়ে দাঁতে ব্যথা হলে যা করবেন

Advertisement

সারা বছরই কম বা বেশি মাংশ খেয়ে থাকেন অনেকেই। তবে টানা মাংস খাওয়ার পর উচ্ছিষ্ট দাঁতের ফাকে জমাট হয়ে মাড়িতে ব্যথা হতে পারে। আবার অনেক সময় প্রদায়ও দেখা দেয়। ঢাকাস্থ কলাবাগানের রাজ ডেন্টাল সেন্টারের ডেন্টাল সার্জন ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ এ সমস্যায় করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ।

বিশেষ করে প্রতি বছর কুরবানির ঈদের পর ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী সে মাড়ি ও দাঁতের নানা সমস্যা নিয়ে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যার কারণ অতিরিক্ত মাংস ও হাড় চিবানো। মানুষের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে বা অন্য কোনো কারণে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্বাভাবিক সংযোগ কেন্দ্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তখন বিশেষ করে মাংসের আঁশ ঢুকে ব্যথার সৃষ্টি করে।

ঈদে অতিরিক্ত মাংস চর্বণে মাংসের আঁশ সহজেই এখানে ঢুকে থাকে। তবে প্রথম অবস্থায় অস্বস্তি বা মৃদু ব্যথা কমাতে টুথ পিক, কাঠি, পিন বা হাতের কাছে যা থাকে সেটা দিয়েই পরিষ্কারের চেষ্টা করে অনেকে। তবে এখান থেকে মাড়িতে প্রদাহ ও সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি, যার ফলে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁকাও বেড়ে যায়, পেরিওপকেট নামক বিশেষ স্থান তৈরি হয়ে দাঁতের ধারক কলা বা পেরিওডোন্টাল নামক রোগের সৃষ্টি করে। কিছুদিন যেতেই লক্ষ্য করা যায় মাড়ি ফুলে যায়, রক্তপড়ে, ব্যথা, দুর্গন্ধ, দাঁত শিনশিন, কামড়ে ব্যথা ও দাঁত নড়ে যাওয়াসহ নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। আবার অনেক সময় টুথপিকের অংশ ভেঙে মাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে জটিল অবস্থার সৃষ্টি করে।

ক্যাপ বা বড় ফিলিং খুলে যাওয়ার আশংকা থাকে অনেক সময়। ডায়াবেটিস ও মুখের যত্নে অবহেলা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ধূমপান প্রভৃতিতে টুথপিক বা কাঠি ব্যবহারে জটিলতা দ্রুত শুরু হয়, আবার অতিরিক্ত খাবার থেকে এসব রোগের মাত্রা বেড়ে গিয়ে মুখের ভিতরে খারাপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। গবেষণায় উঠে আসছে টুথপিক ব্যবহারে এল ৯২৯ বৃদ্ধিতে ফাইব্রোব্লাস্ট তৈরির মাধ্যমে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও।

অনেক ক্ষেত্রে আক্কেল দাঁতের জটিলতাও বাড়তে পারে, সম্পূর্ণ না উঠলে বা বাঁকা হয়ে উঠলে দাঁতের চারপাশের মাড়ির মধ্যে গৃহিত খাদ্য বিশেষ করে মাংস প্রবেশ কষ্টদায়ক প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। আবার অনেকেই টুথ ব্রাশ দিয়ে জোরে ব্রাশ করে খাবার বের করার চেষ্টা করে, তা থেকে দাঁত ও মাড়ি উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। টুথ ব্রাশের ব্রিসল্ সাধারণত দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান পরিষ্কার করতে সক্ষম হয় না, দাঁতের ৭০ শতাংশের মতো পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়।
সেক্ষেত্রে করণীয় কী?

দুই দাঁতের ফাঁকা স্থান পরিষ্কারের সঠিক উপায় হলো বাজারজাত ডেন্টাল ফ্লস নামক বিশেষ সুতা বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ। খাবার জমে থাকার প্রবণতা থাকলে ঈদের আগেই এটা জোগাড় করে নিতে হবে, ব্যবহারবিধি সমন্ধে অজ্ঞাত থাকলে মনগড়া পদ্ধতিতে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অথবা ইন্টারনেটের সাহায্যে তা যথাযথ ব্যবহার জেনে নিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক মাউথ ওয়াশ যেমন ১ শতাংশ পোভিডন আয়োডিন, ক্লোরহেক্সিডিন বা Dl&T পানিতে লবণ মিশিয়ে খাবারের পর কুলকুচি করলেও ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়।

পূর্ব থেকেই যারা মাড়ি রোগে ভুগছেন তাদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি, অপরদিকে দুই দাঁতের সংযোগ স্থানে গর্ত বা অস্বাভাবিক ফাঁকা থাকলে চিকিৎসা প্রয়োজন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement