স্তন্যপায়ী প্রাণী নীলগাই একসময় রংপুর/দিনাজপুর এলাকার দিকে দেখা গেলেও বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে। তবে এখনও ভারতের অধিকাংশ প্রদেশ ও পাকিস্তান, নেপালের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রাণীটির দেখা মেলে।
২৬ নভেম্বর শুক্রবার বিকেল ৪টায় ভারত থেকে আসা ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা মিনাপুর গ্রামে হঠাৎ করেই বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির একটি মাটিয়া ধূসর রঙের পুরুষ নীলগাই দেখা যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে হরিপুর থানা পুলিশের এসআই আবু ইসাসহ আশপাশের লোকজনকে নিয়ে সেটিকে ধরার চেষ্টা করলে নীলগাইটিকে আটক করতে সক্ষম হয়। নীলগাই আটক হওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় কারিগাও বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়। পরে আটক নীলগাইটিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
মিনাপুর এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল জলিল বলেন, নীলগাইটিকে ধরার জন্য এলাকার মানুষ ও পুলিশ তৎপরতা চালায়। ধরা না দিতে চাওয়া নীলগাইটি দ্রুতগতিতে বিভিন্নভাবে বাঁচার চেষ্টা করেও না পারায় আঘাত পেয়ে জখম হয়। পরে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করার পর বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।
এ বিষয়ে স্থানীয় জমশেদ আলী বলেন, আমি কখনো কোনোদিন নীলগাই দেখিনি, আজ প্রথম দেখলাম তবে শেষ পর্যায়ে কষ্ট পেয়েছি। নীলগাইটি নিজেকে বাঁচাতে বিভিন্নভাবে আঘাত পেয়ে মারাত্নকভাবে জখম হয়। পরে শুনলাম চিকিৎসা দেয়া অবস্থায় নীলগাইটি মারা গেছে।
কারিগাও বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার কফিল উদ্দিন বলেন, আমরা নীলগাইটির খবর পেয়ে সেখানে যায়। একটি পুরুষ নীলগাই সীমানার ৩৫৩নং পিলারের ২ এস এলাকা দিয়ে কাঁটাতার পার হয়ে উপজেলার মিনাপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসী প্রাণীটিকে আটক করে।
নীলগাইটি যখন আমরা হাতে পেলাম তখন সেটি আঘাতপ্রাপ্ত ও জখম ছিল। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলার প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নিয়ে যাই। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নীলগাইটি মারা যায়।
এ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্যারেন্ট ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মো. খোরশেদ আলম বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ জখম হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নীলগাইটি মারা যায়। বিলুপ্ত প্রায় নীলগাইটিকে এভাবে ধাওয়া দিয়ে জখম করে শেষ করে দেওয়া উচিত হয়নি। বরং সঠিকভাবে আটক করে সংরক্ষণ করাই ছিল আমাদের কর্তব্য। এভাবে মানুষের হাতে প্রাণী শেষ হতে থাকলে আমাদের জন্য তা মোটেও কল্যাণকর হয়ে উঠবে না।
এ বিষয়ে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা নীলগাইটি উদ্ধার করি এবং সঙ্গে সঙ্গে কারিগাও বিজিবির কাছে হস্তান্তর করি।