সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্মাণ শ্রমিক সুফি মিয়ার স্ত্রী সৈয়দা রিনা বেগম। বাড়িতে দুধের জন্য কাঁদছে ১৩ দিন বয়সী তার যমজ শিশু। এক দিকে স্ত্রীর অসুস্থতা অন্যদিকে দুই ছেলের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন সুফি মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরের ২ আগস্ট উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক সুফি মিয়া ও সৈয়দা রিনা বেগমের বিয়ে হয়। গত ১৫ আগস্ট অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রিনা বেগম যমজ শিশুর জন্ম দেন। অভাবের সংসারে ঘর উজ্জ্বল করে জন্ম নেয়া ছেলেদের পেয়ে খুশি তারা।
সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত ১৫ আগস্ট যমজ ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সৈয়দ রিনা বেগম। একসঙ্গে দুই ছেলের জন্মে পরিবারের সবাই খুব খুশি। কিন্তু সেই খুশিতে ভাটা পড়ে রিনা বেগমের করোনা শনাক্তের পর।
গত ২৪ আগস্ট করোনার নমুনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৫ আগস্ট রাতে তাকে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে বাড়িতে দুধের জন্য কাঁদছে রিনা বেগমের ১২ দিন বয়সী যমজ সন্তান। একদিকে স্ত্রী অসুস্থ, অন্যদিকে দুই ছেলের কান্নায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন জগন্নাথপুরের সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের নির্মাণশ্রমিক সুফি মিয়া।
তিনি বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। যমজ সন্তান হওয়ায় আমাদের আনন্দের শেষ ছিল না। কিন্তু আমার স্ত্রী এখন করোনা আক্রান্ত। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে কীভাবে বাঁচাবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’
সুফি মিয়া আরও বলেন, ‘রিনার শারীরিক অবস্থা ভালো না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হতে পারে। এজন্য অনেক টাকা দরকার। এদিকে মায়ের দুধের জন্য দুই ছেলে কেঁদেই যাচ্ছে।’
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সায়েকুল ইসলাম বলেন, করোনা আক্রান্ত রিনা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিলেটে পাঠানো হয়।