ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে আকস্মিকভাবে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল এরই মধ্যে প্লাবিতও হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুর পয়েন্টে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুর পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় বিপৎসীমার ১০১ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুর পয়েন্টে ১৫৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চলতি বছরে পানি বাড়ার হার এটিই সর্বোচ্চ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। যা বর্তমানে খুব দ্রুত বাড়ছে। বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, দু-একদিন পানি বাড়তে পারে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে। পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে, বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনাসহ জেলার বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে সবজি, আমনসহ বিভিন্ন ফসল। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদীতীরবর্তী ভূঞাপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৫৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ধলেশ্বরীর নদীর পানি ৩৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, পুংলী নদীর পানি ৩৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বংশাই নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
যমুনাসহ সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ক্ষতি হচ্ছে সবজি, আমনসহ বিভিন্ন ফসল। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীতীরবর্তী ভূঞাপুরসহ টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেকেই ঘর সরাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন লোকজন।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, উজানের ঢলে জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। নদীতীরবর্তী যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেসব এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।