১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, বুধবার

ডেলটা ভ্যারিয়ান্টের ধাক্কা : যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকদের আবার মাস্ক পরার নির্দেশ

Advertisement

মহামারি করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডেলটা ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসতর্কতা নির্দেশনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

২৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এক নির্দেশনায় নাগরিকদের আবার মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছে। বদ্ধ স্থানে, বিশেষ করে জনসমাগম হলে মাস্ক পরা জরুরি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

যেসব এলাকায় ডেলটার সংক্রমণ বেশি, সেসব এলাকায় টিকা গ্রহণ করেছেন বা টিকা নেননি—এমন সব নাগরিককে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সিডিসি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্য নির্দেশনা কড়াকড়ি করার পরামর্শ দিয়েছে। স্কুলের অভ্যন্তরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পরিদর্শনে যাওয়া লোকজনকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। টিকা গ্রহণ করা, না–করা সবাইকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্ক পরার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের স্টেটগুলোতে ব্যাপকভাবে ডেলটা ধরনের সংক্রমণ হচ্ছে। অ্যারিজোনা ও ওয়াইওমিংয়ে নতুন সংক্রমণের হারকে উচ্চমাত্রার এবং আশঙ্কাজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিডিসি।

বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। গত মে মাসে সংক্রমণের নিম্নহার বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছিল। সিডিসি তখন বলেছিল, টিকা গ্রহণ করা হয়ে গেছে, এমন নাগরিকদের মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। ডেলটা ধরনের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসতর্কতায় এখন পরিবর্তন আনা হলো।

পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গত সপ্তাহে সিডিসি ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকের পর গতকাল মঙ্গলবার পরিবর্তিত নির্দেশনার কথা জানান সিডিসির পরিচালক রোচেল ওয়ালেনস্কি। তিনি বলেন, সিদ্ধান্তটি হালকাভাবে নেওয়া হয়নি।

করোনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজনের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে উল্লেখ করে রোচেল বলেন, সবাই ক্লান্ত হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মানসিক সমস্যার চ্যালেঞ্জও এখন মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বহু সংক্রমণ ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ বেসামাল হয়ে উঠেছে।

রোচেল বলেন, স্বাস্থ্যসতর্কতার পরিবর্তিত নির্দেশ কোনো সুসংবাদ নয়। তা জেনেও এ নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা লোকজনকে জানাতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র উচ্চমাত্রার প্রত্যাশা ছিল যে ব্যাপক টিকাদানের মধ্য দিয়ে এ গ্রীষ্মেই দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। হোয়াইট হাউস ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দেশের ৭০ শতাংশ লোকজনকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু তা অর্জিত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক লোক এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগেই বলেছেন, মোট জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশের ওপরে টিকা না নিলে করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা কঠিন হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ভাইরাস মোকাবিলার জন্য যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। গত বসন্তের আগের বাস্তবতা থেকে এখন ভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

লুইজিয়ানা, অ্যালাবামা ও মিজৌরির হাসপাতালগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। এসব স্টেটে নিউইয়র্কের মতো হাসপাতাল ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীও নেই।
আমেরিকান জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লোকজনের অধিকাংশই ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী। তাঁদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ টিকা নেননি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement