হেলেনার বাসায় ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ক্যাসিনো, মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জিনিষের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেজন্য তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হবে। এছাড়াও তিনি ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নানা রকম মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন, এজন্য তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবে। এছাড়াও বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন ছাড়া জয়যাত্রা নামে টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনার কারণে আলাদা মামলা করা হবে।
আজ (৩০ জুলাই) শুক্রবার বিকেলে ঢাকার কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
সেখানে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এবং তার বাসা থেকে মাদক, বণ্যপ্রাণীর চামড়া ও ওয়াকিটকিসহ বিদেশি মুদ্রাও জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর অভিযানে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার ৩৬ নং রোডের ৫নং বাড়ি ‘জেনেটিক রিচমন্ড’-এ অভিযান পরিচালনা করে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে (৪৯) গ্রেফতার করে।
সে অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ১টি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ১টি হরিণের চামড়া, ২টি মোবাইলফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, ২টি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার সরঞ্জামাদি- ৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে তার জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। তাছাড়াও মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন।
বিভিন্ন খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন। এছাড়া অনৈতিক পন্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করতেন।
বিভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছেন। অনেক সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ‘ফেসবুক লাইভ’-এ এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ ও উত্ত্যক্ত করতেন। তারপর ফোন করে তাদেরকে হেয় করতেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন। প্রবাসী সেফুদার সঙ্গে হেলেনার নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
হেলেনা জাহাঙ্গীর তার জয়যাত্রা টেলিভিশনের জন্য সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ করেছিলেন। তিনি প্রবাসী প্রতিনিধি নিয়োগের নামে তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অবৈধ কাগজপত্র পাওয়ায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া এখানে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের অফিস পেয়েছি। এ বিষয়েও তদন্ত করা হবে।