রংপুরের হারাগাছে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানা (২৭) নামে এক ভুয়া এসআইকে (উপপরিদর্শক) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। (৫ অক্টোবর) বুধবার দুপুরে তাকে রংপুর মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে (৪ অক্টোবর) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হারাগাছ পৌর এলাকার বানুপাড়া কলেজ মাঠ থেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল রানা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ছিরাগঞ্জ চুলকা গ্ৰামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর করা মামলার অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে মুঠোফোনে পরিচয় হয় সোহেল রানার সঙ্গে। এ সময় নিজেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দেন সোহেল রানা। বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোনে কথা বলার একপর্যায়ে সোহেল রানার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে মুঠোফোনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও কলে ওই গৃহবধূর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন সোহেল রানা। এরপর অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং তার ভিডিও ধারণ করে রাখেন প্রতারক সোহেল রানা।
সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোহেল রানা হাতীবান্ধা থেকে হারাগাছে আসেন এবং ধর্ষণের ভিডিও পরিবারকে দেখানোর ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে নিজ বাড়িতেই ধর্ষণ করেন। এরপর গত (৩ অক্টোবর) সোমবার রাত ১১টার দিকে আবারও হারাগাছে গিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তার চিৎকারে পাশের ঘর থেকে স্বামী বের হয়ে এসে সোহেল রানাকে আটক করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে হারাগাছ পৌরসভার কাউন্সিলরের পরামর্শে আটক সোহেল রানাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
হারাগাছ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুজ্জামান কবির বলেন, সোহেল রানা নিজেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়েছিলেন কিনা তা তদন্তে জানা যাবে। তাকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে মেট্রোপলিটন আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া শারীরিক পরীক্ষার জন্য মামলার বাদীকে মঙ্গলবার রাতেই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানা ক্যাম্পাসে অবস্থিত ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই নারী নিজেই বাদী হয়ে সোহেল রানাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণ ও পর্নগ্ৰাফি মামলা করেছেন। এরপর সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।