রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। গতকাল মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে আজ বুধবার (২৮ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে তারা মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন যে, নতুন করে মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে ছয়জন করোনায় এবং ১২ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। মৃত ১৮ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৬ জন, নাটোরের ৩ জন, পাবনার ৭ জন এবং কুষ্টিয়ার ১ জন ও মেহেরপুরের ১ জন ছিলেন।
৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে বর্তমানে ৪০৩ জন রোগী ভর্তি আছেন। বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের মধ্যে রাজশাহীর বাসিন্দা ছিলেন ১৯৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩১ জন, নাটোরের ৬৩ জন, নওগাঁর ৪৯ জন, পাবনার ৫৪ জন, কুষ্টিয়ার ১০ জন এবং জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন করে ছিলেন। ২০ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ২০ জন। ৪০৩ জন রোগীর মধ্যে করোনা নিয়ে ভর্তি ১৮৩ জন; উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ১৭৭ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন। একই দিনে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৯ জন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়েছে ৭৫ জনের। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পরীক্ষা করা আরও ৪৬৩ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে করোনা শনাক্ত হার রাজশাহীতে ২২ দশমিক ৭৫ শতাংশ; নাটোরে ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, চলতি জুলাই মাসের ২৭ দিনেই রাজশাহী মেডিকেল (কলেজ) হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু ৫০০ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৮ জন নিয়ে আজ পর্যন্ত প্রাণহানি দাঁড়াল ৫২৩ জনে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৬৭ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩২১ জন মারা যান। বাকি ৩৫ জন করোনা নেগেটিভ ছিলেন। তবে তারা অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন। এর আগে গত জুন মাসে হাসপাতালে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪০৫ জন।
দেশে করোনার তাণ্ডব শুরুর পর, গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে এই বছরের জুন মাস পর্যন্ত শুধু রামেক হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ১৬১ জন রোগী। এই ১৪ মাসের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৫ হাজার ৯২৭ জন; এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮ জন। তার মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৬ জনের; বাকিরা উপসর্গ বা অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা যান।