২৫ এপ্রিল, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

লক্ষ্মীপুরে যুবদল নেতা হত্যা মামলার সব আসামি খালাস

Advertisement

লক্ষ্মীপুরে যুবদল নেতা মো. মিজান হত্যা মামলায় সাত আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। (২৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। 

এদিকে রায় শুনে আদালতে উপস্থিত থাকা মামলার বাদী শিউলি আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় বক্তব্য জানতে চাইলে কোনো কিছু না বলেই চলে যান তিনি।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এতে আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মান্দারী ইউনিয়নের সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনির হোসেন, জামাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন, আবু সিদ্দিক মিশু, ফয়সাল, মোরশেদ আলম ও বেলাল হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিজান মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর গ্রামের আবদুল হামিদ মুন্সির ছেলে। তিনি মান্দারী ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। মিজান ডাকাতি ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার অত্যাচারে স্থানীয়রা জর্জরিত ছিল। একটি বাহিনী তৈরি করে এলাকায় তিনি অপকর্মের রাজত্ব গড়ে তুলেছিলেন। তার ভয়ে সন্ধ্যার পর পরই দরজায় তালা ঝুলিয়ে সবাইকে ঘুমাতে হতো। বাইরে বের হতো না কেউই। তার মৃত্যুর পর স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি হন। তার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়ে এখন স্থানীয়রা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের (১৩ অক্টোবর) রাতে অভিযুক্তরা ঘর থেকে মিজানকে ডেকে নিয়ে যান। দরজা খুলে মামলার বাদী ও মিজানের স্ত্রী শিউলি আক্তার অভিযুক্তদের দেখতে পান। এরপর থেকে মিজান ঘরে ফিরেনি। এতে শিউলি অভিযুক্ত মনিরসহ কয়েকজনের বাড়িতে গিয়ে স্বামীর খোঁজ করেন। কিন্তু কেউই কোনো কিছু বলেননি। (১৬ অক্টোবর) সকালে মোহাম্মদনগর গ্রামে মনিরদের বাড়ির পুকুরের আড়ায় গাছের শেকড়ের ভেতর থেকে মিজানের হাত দেখা যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। 

এ ঘটনায় (১৯ অক্টোবর) ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৮ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন শিউলি। পরবর্তীতে মামলাটি একাধিকবার তদন্ত হয়। তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মীপুর মডেল থানা পুলিশের এসআই হিমেল রায়, পুষ্প বরণ চাকমা ও জেলা সিআইডির এসআই মো. শাহজাহান। ২০১৮ সালের (২৯ এপ্রিল) ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি ও ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

খালাসপ্রাপ্ত আসামি ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদেরকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছিল। আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আমরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি।

লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন বলেন, আসামিরা যদি খালাস হয়ে যায়, তাহলে মিজানকে হত্যা করেছে কে? আমরা এ রায়ের নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এ রায় মানি না।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement