১৯৭৬ সালের ২ আগস্ট যুক্তরাজ্যের আই টিভিতে প্রচারিত গ্রানাডা টেলিভিশনের ‘ওয়ার্ল্ড ইন অ্যাকশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসকে দেয়া সাক্ষাতকারে কর্নেল রশীদ স্বীকার করেন- বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুখ্যাত খুনি তিনি নিজে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শাসনক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা নিয়ে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে কথোপকথনে উঠে আসে সেই চক্রান্তের কথা। ম্যাসকারেনহাসের প্রশ্নের জবাবে কর্নেল রশীদ বলেন, ‘১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে আমি খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে দেখা করি। এরপর ১১, ১২ ও ১৩ তারিখেও আমি তার সঙ্গে দেখা করি। তখন তাকে আভাসে জানাই যে, শেখ মুজিবকে ও তার সরকারকে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে এবং এর ফলে মুজিব নিহত হতে পারেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে রশীদ খোলাখুলি তুলে ধরে খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে তার কী কী কথা হয়েছিল। রশীদ বলেন, মোশতাককে আমি প্রশ্ন করি। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে এদেশ কি উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে পারে? উত্তরে মোশতাক বলেন, এর কোনো সম্ভাবনা নেই। এক পর্যায়ে খন্দকার মোশতাক বলেন, কারো যদি সাহস থাকে, তাহলে ভবিষ্যৎ নেতার জন্য (শেখ মুজিবকে অপসারণের পর যিনি নেতা হবেন) তা ভালোই হবে।
সাক্ষাতকারে মেজর রশীদ বলেন, ‘১৫ আগস্টেই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে এটা মোশতাককে জানাইনি। আমরা শঙ্কিত ছিলাম, যদি এটা তিনি শেখ মুজিবের কাছে ফাঁস করে দিয়ে তার আস্থাভাজন হতে চান? কিন্তু খন্দকার মোশতাক তা করেননি। যদিও সরকারের একজন মন্ত্রী হিসাবে খন্দকার মোশতাক জানতেন যে বঙ্গবন্ধুকে যে কোনো সময় হত্যা করা হতে পারে।