১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, বুধবার

কমনওয়েলথ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর প্রভাব

Advertisement

১৯৭৩ সালের ৫ আগস্টের ঘটনা। কমনওয়েলথ সম্মেলনের শুরুর দিনে অস্ত্র প্রতিযোগিতার চিরস্থায়ী অবসানের স্বপক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সম্মেলনে যোগদানকারী প্রতিনিধিদের ওপর এর গভীর প্রভাব পড়েছে বলে খবরে প্রকাশ হয়।

এদিন পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সম্মেলনে একটি ঘোষণা গ্রহণ করা হয়। আণবিক বোমা পরীক্ষা সার্বিকভাবে বন্ধের দাবি জানিয়ে নিউজিল্যান্ড একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে সমর্থন জানিয়েছিল বাংলাদেশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, কমনওয়েলথ সম্মেলন কোন ধারায় চলবে তার মূলসূত্র বঙ্গবন্ধুর ভাষণেই নির্ধারিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর বক্তৃতায় স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটাতে হবে। শান্তির স্বপক্ষে তার দেশের সার্বিক ও সক্রিয় সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন তিনি। বিশ্ব শান্তির পক্ষে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বিপক্ষে যে বক্তব্য বঙ্গবন্ধু উপস্থাপন করেছিলেন তারই রেশ ধরে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সিনিয়র কর্মকর্তারা আণবিক বোমার পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ করতে নিউজিল্যান্ডের প্রস্তাবের পক্ষে অবস্থান নেন।

আণবিক অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে যে ঘোষণা গৃহীত হয়, তাতে ফ্রান্স ও চীনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ দুটি দেশ বায়ুমণ্ডলে আণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।

উদ্বোধনী দিবসে নিউজিল্যান্ডের পক্ষ থেকে ফরাসি আণবিক বোমা পরীক্ষা কর্মসূচি বন্ধের দাবি জানানো হয়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ ও সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। এ সময় কমনওয়েলথ নেতাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।

এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশের সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। সন্ধ্যায় গণভবনে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাসসের খবরে বলা হয়, তিন ঘণ্টার বৈঠকে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।

১৮ আগস্ট নয়াদিল্লিতে আলোচনা আবার শুরু হলে ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে কিছুটা নিষ্পত্তিতে পৌঁছানো যাবে। সম্প্রতি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান আলোচনায় আকাশবাণীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ আশা প্রকাশ করেন ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা পিএন হাকসার।

তিনি বলেন, ‘ধৈর্য আর চেষ্টা থাকলে উপমহাদেশের সমস্যাগুলোর সমাধান হতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হল উপমহাদেশের দেশগুলোর সম্পর্কের পুনর্গঠনের পথ খুঁজে বের করা। আমার মতে এখন কিংবা আগামীতে যত বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন, সকলের এগিয়ে যেতে হবে।’

সিমলা চুক্তিতে ভারত পাকিস্তানকে অনেক কিছু ছাড় দিয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়, হাকসার সেটার সঙ্গে একমত হননি। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি জয়-পরাজয়ের দৃষ্টিতে সিমলা চুক্তিকে দেখি এবং পরাজিত পক্ষের ওপর একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার মনোভাব নিয়ে বিচার করি তবে অপরিকল্পিত দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে বিবেচিত হবে। সিমলা চুক্তির মধ্য দিয়ে একটা আশার আলো দেখা গেছে।’

জাতির জনক আরও বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানি নাগরিকরা আইনত পাকিস্তানেরই নাগরিক। এদের ফেরত নিতে অস্বীকার করে পাকিস্তান শুধু তার নিজের আইন ও নৈতিকতার লঙ্ঘনই করছে না, নাগরিকত্বের সর্বসম্মত আদর্শও লঙ্ঘন করছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement