উপমহাদেশে রাজনীতি ছিল অভিজাত ও বিত্তবানদের অধিকারে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই এ দেশে রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আধুনিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্মদাতা।
মহান এই নেতার আত্মত্যাগ ও অর্জনকে ১৯৭৫ সালে হত্যার পর নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর ১৯৭৬ সালের ৩০ মে লন্ডনের ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে মেজর ফারুক স্বীকার করেন—বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে তিনি জড়িত ছিলেন। ‘আই হেল্পড টু কিল মুজিব, ডেয়ার ইউ পুট মি অন ট্রায়াল?’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে সদম্ভে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন খুনিচক্র। দম্ভভরে আত্মস্বীকৃত খুনী মেজর ফারুক বলেন ইচ্ছা করলে বাংলাদেশ সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।
বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় ঘোষণার পর সেই দম্ভ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে অন্তিম সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন এই কুখ্যাত খুনি।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মধ্য দিয়ে জাতির ইতিহাসের অন্ধকার যুগের অবসান ঘটে। জাতি হয় কলংকমুক্ত। তবে সাধারণ মানুষের মতো সাধারণ আদালতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ সম্পন্ন হওয়ার সময় লেগেছে প্রায় ১৪ বছর। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনীদের রক্ষা করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটিকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন।