পাকা পেঁপে একটি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল। শুধু তাই নয়, কাঁচা পেঁপেতেও প্রচুর পরিমানে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য বিদ্যমান।
ঔষধি গুণ: আলসার, অজীর্ণ, ত্বকে ঘা, কৃমি সংক্রমণ, একজিমা, কিডনি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার নিরাময়েও কাজ করে।
পাকা ও কাঁচা পেপের ব্যবহার: পাকা পেপে ফল হিসেবে এবং রোগীর পথ্য হিসেবে এমনকি কাঁচা পেপে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।
পেপে চাষের উপযুক্ত জমি ও মাটি : পেপে চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভাল।
পেপের জাত পরিচিতি:
বারি পেঁপে-১ (শাহী পেঁপে): স্ত্রী ও পুরুষ ফুল গাছে ধরে আলাদা। চারা রোপনের কমপক্ষে ৩-৪ মাস পর ফুল আসে। পেঁপে কান্ডের খুব নিচ থেকেই ধরা শুরু হয়। এক একটি পেঁপের ওজন ৮৫০-৯৫০ গ্রাম। ফুল আসে চারা রোপনের ৩-৪ মাস পর, পাকা পেঁপে সংগ্রহ করা যায় ফুল আসার ৩-৪ মাস পর। তবে প্রায়। সারা বছরই প্রায় ফল দিয়ে থাকে এ জাতটি।
পেঁপে চারা তৈরি: সহজ পদ্ধতিতেই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায়। তবে পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
চারা রোপণ পদ্ধতি: চারা রোপণ করা হয় দেড় থেকে দুই মাস বয়সের। কমপক্ষে ২ মিটার দূরে দূরে চার পাশে ২ ফুট পরিমান গর্ত তৈরি করতে হবে। এমনকি চারা রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটিতে সার মিশাতে হবে। আবার পানি নিকাশের জন্য দুই সারির মধ্যবর্তী স্থানে ৫০ সে.মি নালা রাখা প্রয়োজন। ব্যবসায়ীকভাবে পেঁপে চাষের জন্য বিশেষভাবে বর্গাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রত্যেক গর্তে ৩ টি করে চারা রোপণ করতে হয়। গাছে ফুল আসলে ১ টি স্ত্রী গাছ রেখে বাকি গাছ তুলে ফেলা প্রয়োজন। তবে পরাগায়ণের সুবিধার জন্য বাগানে ১০% পুরুষ গাছ রাখা দরকার।
পেপে গাছে সার প্রয়োগ: গাছ প্রতি জৈব সার ১৫ কেজি , ইউরিয়া সার ৫৫০ গ্রাম, টিএসপি সার ৫৫০ গ্রাম, এমওপি সার ৫৫০ গ্রাম, জিপসাম সার ২৫০ গ্রাম, বোরাক্স সার ২৫ গ্রাম এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার এক সাথে ভালভাবে প্রয়োগ করতে হয়। তবে ইউরিয়া ও এমওপি সার ছাড়া সব সার গর্ত তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপনের পর গাছে নতুন পাতা আসলে ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস পর পর ইউরিয়া ও এমওপি সার প্রয়োগ করতে হয়। যখন গাছে ফুল আসে তখন এ মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়।
পেপে গাছের রোগের নাম : পেঁপের ড্যাম্পিং অফ রোগ দমন।
মাটিতে থাকা ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হতে পারে। এই রোগটি সাধারণতবীজ গজানোর সময় বা চারা অবস্থায় হয়ে থাকে।
ক্ষতির নমুনা : তখন সে অবস্থায় বীজ পচে যায় ও চারা মাটির উপর বের হয়ে আসতে পারেনা। এমনকি এভাবে অংকুর গজানোর আগেই পচন হতে পারে। আবার কখনো কখনো চারা গজানোর পরেও জীবাণুর আক্রমণ ঘটে। তখন চারার গোড়া বা শিকড় পচে গিয়ে আক্রান্ত চারা মাটিতে পড়ে যায় তারপর মারা যায়। চারার বয়স যত বাড়তে থাকে রোগের প্রকোপ তত কমতে থাকে।
পেপে চাষের অনুকূল পরিবেশ: বর্ষাকালে ঢলে পড়া রোগের প্রকোপ খুব বেশি।
ফসল ঘরে তোলা : রান্না করে সবজি হিসেবে কচি ফল সংগ্রহ করা হয়। তবে পাকানোর জন্য ফলের ত্বক হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে সংগ্রহ করতে হয়।