১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, বুধবার

সরকারি বস্তার চাল সাধারণ বস্তায় ভরছিলেন খাদ্য কর্মকর্তা, হাতেনাতে ধরা

Advertisement

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়। কালোবাজারে বিক্রির জন্য খাদ্যগুদামের চালের বস্তা বদলে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরছিলেন তারা। এ ঘটনায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রসুল জমাদ্দারসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, শুক্রবার খাদ্য অধিদফতরের পক্ষে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুবিনা পারভীনের লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এতে ৫ জন নামীয় এবং ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার দুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাতে উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদা খাতুন ও তার সহযোগী মোফাজ্জেল খান সকারি গুদামের লেভেলযুক্ত বস্তার চাল কেটে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল ভরছিলেন। এই সংবাদ পেয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ইউএনও এবং ওসির নেতৃত্বে উপজেলা খাদ্যগুদামে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বস্তা বদলের সময়ে হাতেনাতে আটক হন ফরিদা খাতুন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮০০ বস্তায় ভর্তি ২০ মেট্রিক টন সরকারি চাল ছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিলযুক্ত ৫০৭টি সরকারি চালের খালি বস্তা এবং জোড়া কবুতর ও ডলফিন মার্কার ১ হাজার পিস মিনিকেট চালের খালি বস্তা উদ্ধার করা হয়।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তাজুল ইসলাম জানান, ওসিএলএসডি ফরিদা খাতুনের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তাকে হাতেনাতে ধরার পরিকল্পনা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী সোর্সের মাধ্যমে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে বাবুগঞ্জের ইউএনও এবং থানার ওসিকে নিয়ে উপজেলা খাদ্যগুদামে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারি সিলযুক্ত ৫০ কেজির চালের বস্তা বদল করে জোড়া কবুতর ও ডলফিন মার্কা প্লাস্টিকের (২৫ কেজির বস্তা) বস্তায় ভরার সময় ফরিদা খাতুন ও সহযোগী মোফাজ্জেল খানকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দিয়ে থানায় একটি নিয়মিত মামলা করা হয়।

বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমীনুল ইসলাম জানান, উপজেলা খাদ্যগুদামে উপস্থিত হয়ে ৩ নং গুদামে পাচারের উদ্দেশ্যে সাজিয়ে রাখা ৮০০ বস্তায় প্রায় ২০ মেট্রিক টন সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। পাচারের সুবিধার্থে সরকারি সিলযুক্ত বস্তা বদল করে মিনিকেট চালের বস্তায় ভরে চালগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে।

অভিযোগ আছে, খাদ্য বিভাগের উপপরিদর্শক ফরিদা খাতুন বাবুগঞ্জ উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পাওয়ার পর সরকারি চাল বিক্রির একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। রাতের আঁধারে বস্তা বদল করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালের আড়তে নিয়ে বিক্রি করতেন।

এ ছাড়া ভিজিডি, টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে সরকারি বরাদ্দের চালের ডিও তিনি চেয়ারম্যান-সদস্য এবং প্রকল্পের সভাপতিদের কাছ কিনে সরকারি ৩ নং খাদ্যগুদামে রাখতেন এবং সরকারি সিলযুক্ত ওই পাটের বস্তার চাল রাতের আঁধারে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির প্লাস্টিকের বস্তায় প্যাকেটের পরে ট্রাকভর্তি করে পাচার করতেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement