৭ ডিসেম্বর, ২০২৩, বৃহস্পতিবার

সিরাজগঞ্জে অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি, বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

Advertisement

গত দুই সপ্তাহ সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ওঠায় জেলায় ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানও বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৩ জুন দুপুরে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ৪০০ পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিতদের মাঝে ১৪০ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার স্ব স্ব উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো দ্রুত বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মজুত রয়েছে ৭৭১ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে বিশেষ বরাদ্দের জন্য ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১ হাজার ব্যান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও খাল-বিলের পানি বাড়ায় জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে ৯১০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, পাট, তীল, মরিচ, বাদাম, বোনা আমন, শাক-সবজি, বীজতলাসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফীউল্লাহ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম মণ্ডল জানান, যমুনার পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল এলাকার ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানি নেমে গেলে দ্রুত পরিষ্কার করে পাঠদান শুরু করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে যমুনা নদীর পানি সব পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে সেটা স্বাভাবিক বন্যা। এ জেলায় প্রতি বছরই এমন বন্যা হয়ে থাকে। নদীর অভ্যন্তরীণ নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়। এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বলেন, সব সময় জেলার বন্যার্ত মানুষের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ও স্ব স্ব উপজেলার ইউএনওরা নিয়মিত তাদের খোঁজ-খবর রাখছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement