স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে বিয়ে ও ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় মূল আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালত। সেই সঙ্গে ওই বিয়ের কাজি ও এক শিক্ষককে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
(১৬ অক্টোবর) রোববার সকালে বরগুনা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বরগুনার বেতাগী উপজেলার কালিবাড়ী গ্রামের হাতেম পহলানের ছেলে মাসুদ মনা, একই গ্রামের সেকান্দার মিয়ার ছেলে আবদুল খালেক মাস্টার ও একই উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের বিয়ের কাজি আদম আলীর ছেলে মাওলানা শাহজাহান।
রায় ঘোষণার সময় শিক্ষক আবদুল খালেক অনুপস্থিত ছিলেন। অন্যদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম দশম শ্রেণির ছাত্রী, সে নিজে বাদী হয়ে ওই ট্রাইব্যুনালে ২০১০ সালের (৫ জানুয়ারি) মামলা করেন। তাকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ মনা ২০০৯ সালের (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার সময় ওই ছাত্রী স্কুলে যাবার পথে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালেক মাস্টারের ঘরে আটক রাখা হয়। পরে বিয়ের কাজি মাওলানা শাহজাহানকে দিয়ে তার বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো হয়।
আসামি মাসুদ মনা ভিকটিমকে খালেক মাস্টারের বসত ঘরে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। পরে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে মামলা করে। পরে ট্রাইব্যুনাল ভিকটিমসহ ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামি মাসুদ মনা নাবালিকা স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ ও ধর্ষণ করেছে। আর আসামি আবদুল খালেক মাস্টার এ কাজে সহায়তা এবং মাওলানা শাহজাহান কাজি একজন নাবালিকার বিয়ে রেজিস্ট্রি করে অপরাধ করেছেন। নাবালিকার ধর্ষণের মেডিকেল পরীক্ষা, তার সাক্ষ্য ও অন্যান্য সাক্ষ্য মামলার ঘটনা সমর্থন করে।
রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছেন। কাজিকে শাস্তি দেওয়া ন্যায় সঙ্গত। একজন কাজি নাবালিকা জেনেও বিয়ে রেজিস্ট্রি করেছেন। খালেক মাস্টার ধর্ষণ ও বাল্য বিয়েতে সহায়তা করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী রনজু আরা শিপু বলেন, আমরা রায়ে অসন্তুষ্ট, উচ্চ আদালতে আপিল করব।