১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, শনিবার

ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর: র‌্যাব

Advertisement

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা তৈরি করে পরে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এমন তথ্য জানিয়ে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করা হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য আমরা পেয়েছি। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে‌।

আল মঈন বলেন, হেলেনা সুনির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির জন্য থেমে থাকেননি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে তার। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে তাকে তিনি ঘায়েল করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন এবং সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন শুধুমাত্র উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। আমাদের মামলার কারণ এটাই। সে রাষ্ট্রের ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে যা তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে, জনগণের মধ্যেও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন এই মামলাটির র‌্যাব তদন্ত করবে তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে আমরা আবেদন করব। তবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে হবে। হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী ১৯৯০ সাল থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে অন্যদের সঙ্গে পার্টনারশিপ এর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করে এখন পর্যন্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।হেলেনা জাহাঙ্গীর র‌্যাব

আমরা জানতে পেরেছি গত দুই বছরে বিভিন্ন মাধ্যম এবং টেলিভিশনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে, এজেন্সি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা আদায় করা হয়েছে। কারও কাছ থেকে দশ হাজার কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা, আবার কারও কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। কী কারণে টাকা নিয়েছেন এবং কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে- এ বিষয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা। তিনি জানান, জয়যাত্রা টেলিভিশন’র আইডি কার্ড ব্যবহার করে অনেক প্রতিনিধিও এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন- হেলেনা জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, তার ১৫ থেকে ১৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি কিংবা ব্ল্যাকমেইল করে আদায় করা টাকাগুলো তিনি ফাউন্ডেশনে কাজে লাগাতেন। সুনামগঞ্জে তিনি ত্রাণ বিতরণ করায় স্থানীয়রা তাকে পল্লী মাতা উপাধি দিয়েছেন। ফাউন্ডেশনের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে অনেক টাকা এনেছেন। এগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, ফ্ল্যাট কিংবা গাড়ির সংখ্যা কতগুলো সে বিষয়ে প্রকৃত কোনও তথ্য আমাদের দিতে পারেনি। কখনও ৬টি গাড়ি, কখনও ৮ গাড়ির কথা উল্লেখ করেন তিনি। এসব বিষয়ে যারা তদন্ত করবেন তারা খতিয়ে দেখবেন। তার আয়ের উৎস সম্পর্কে সিআইডি কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশন এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

জিজ্ঞাসাবাদে হেলেনা জাহাঙ্গীর র‌্যাবকে আরও জানাযন, সম্প্রতি তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে সমাজসেবক হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টায় ছিলেন। বেশ কয়েকবার তিনি নির্বাচন করতে চেয়ে ছিলেন। তিনি শুধুমাত্র নিজের অবস্থান উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এধরনের অপপ্রয়াস অপতৎপরতা চালিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন দেশের মানুষ তাকে চিনবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement