২৩ এপ্রিল, ২০২৪, মঙ্গলবার

আবারও ৩ দিনের কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

Advertisement

হামলাকারীদের শাস্তি এবং নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। দুই দফা দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে সময়ও বেধে দিয়েছিলেন তারা।

কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় আগামী (২৩ অক্টোবর) রোববার থেকে ফের ৩ দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। (২২ অক্টোবর) শনিবার দুপরের দিকে রামেক হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই ঘোষণা আসে।

মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের বেধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ফলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। দাবি পূরণ না হওয়ায় আগামী তিনদিন কর্মবিরতি ঘোষণা করছি। পাশাপাশি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রামেক হাসপাতালে ইমারজেন্সি গেটের সামনে ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মঘট শিথিল করেছিলাম। এখন আমাদের দাবি নিয়ে কর্মসূচিতে দাঁড়িয়েছি। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান করবো।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু নাকি আত্মহত্যা সেটা আমরা জানি না। আমাদের এখানে আসার আগেই তিনি মারা যান। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদেরকে পোস্টমর্টেমের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাহলে কী ভেবেই নেব তারা নিজেরা হত্যা করেছে? তারা হত্যা করে ধামাচাপা দিতে এই হামলা চালিয়েছে?

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে অংশ নেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা, রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী, স্বাচিপ সভাপতি প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমান, বিএমএ সভাপতি ও রামেকের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. নওশাদ আলী প্রমুখ।

গত (১৯ অক্টোবর) বুধবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে যান শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নেন শিক্ষার্থী। সেখানেই তিনি মারা যান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আহত শাহরিয়ারকে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক আইসিউতে নিতে বলেন। কিন্তু সেখানে নিতে চিকিৎসকের রেফারেন্স দিতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগেই মারা যান ওই শিক্ষার্থী।

এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। ওই সময় দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা নিরব ভূমিকায় ছিলেন।

চিকিৎসকদের হামলায় চার রাবি শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের বাইরের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল পরিচালকের দপ্তরে ভাঙচুর চালান। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গেও তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হলেও ঘটনার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।

ওই দিন রাত ১১টা থেকে দুই দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মধ্যরাতে রামেক হাসপাতাল, রাবি এবং নগর পুলিশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ঘটনার তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে ক্যাম্পাসে ফিরে যান রাবি শিক্ষার্থীরা।

পরদিন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন হাসপাতালের পরিচালক। সেখানে দাবি বাস্তবায়নে ২ দিনের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। পরিচালকের আশ্বাসে কাজেও ফেরেন তারা। ওইদিনই ৩ শতাধিক রাবি ছাত্রের নামে মামলা দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হামলা-ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে এই মামলা করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement