২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

ধারাবাহিক উপন্যাস : এখন অনেক রাত

Advertisement

পূর্ব প্রকাশের পর-

(তিন)
সারাদিন কাজে ডুবে ছিলাম। সন্ধ্যার ঠিক আগমুহুর্তে বেরিয়ে পড়লাম চা বাগান থেকে। হাঁটতে হাঁটতে সেই ছোট বাজার। বাজারের পাশে ছোট্ট একটি নদী। শীতকালে কাদা লেপ্টে আছে নদীর বুকে। কোথাও পানি। কোথাও জেগেছে চর। ক্ষতবিক্ষত বুকে কচি ধানের চারা বেড়ে উঠছে লিকলিকিয়ে। নদীর ওপর ছোট্ট সাঁকো। সাঁকো পেরিয়ে মাথায় টুকরিতে করে সবজি, কমলা, কাঁচা-পাকা কলা নিয়ে সার বেঁধে আসছে দূরের গ্রামের মানুষ। বাজারটা ছোট হলেও বেশ জমজমাট। দু’তিনটি পণ্যবাহী ট্রাক মাল খালাস করছে। আবার কেউবা সবজি, টিলার কমলা, কলা নিয়ে তুলছে ট্রাকে।

সাঁকোর ওপর দিয়ে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে সূর্য। গোধুলির আবছায়ায় দূরের জনপদ অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। কেমন যেন সুনশান চারদিক। শূণ্যতা, শুধুই শূণ্যতা। একঝাঁক কানি বক উড়ে গেল মাথার ওপর দিয়ে। এককাপ চা খেলে ভাল লাগত। চায়ের দোকানগুলো জমজমাট। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে। সাদা কালো পোস্টারে ছেয়ে গেছে চায়ের দোকানের বাঁশের বেড়া। টেলিভিশনে টক শো চলছে। চলছে নানামূখী আলোচনা। সাকা চৌধুরী-মুজাহিদের ফাঁসি নিয়ে নানা মন্তব্য। অচেনা- অজানা জায়গায় বেঞ্চের এক কোনায় ঘাপটি মেরে বসে চায়ের অর্ডার দিলাম।

আসসালামু আলায়কুম বাজান।

ভাবনামগ্ন ছিলাম। চমকে তাকালাম। নওশের আলী। সেই ডিমওয়ালা। আগেরদিনের পোশাকেই। আধা ছেঁড়া পাঞ্জাবি। হাঁটু বরাবর প্যাঁচানো লুঙি। তাকাতেই মলিন মুখে হাসি দিলেন। কপালের চামড়ার ভাজে নাকি বয়স গোনা যায়, কিন্তু নওশের আলীর কপালে এত ভাঁজ যে বয়স গোনার চেষ্টা করাই বৃথা।

আরে আপনি। বসেন।

বইতাম না বাজান।

আরে বসেন। এই জিলেপি আর চা দিও তো।

পাশে বসেই কোচড় থেকে চারটে ডিম বের করে সামনে রাখলেন। ছোট্ট পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো এই চারটে ডিমই নওশের আলীর দৈনন্দিন আয়ের একমাত্র পথ। বলেছিলাম প্রতিদিন ডিম আমাকেই দিতে। তিনি ভোলেননি। ঠিক মনে করে নিয়ে এসেছেন। বাজারে না বসে অপেক্ষায় ছিলেন আমার। আজ যদি না আসতাম?

চায়ের দাম দিয়ে কুড়ি টাকার একটা নোট হাতে গুঁজে দিয়ে চা বাগানের পথে হাঁটা দিলাম। পকেটের মোবাইল ফোন বের করে ডা. পারমিতার নাম্বার বের করলাম। এখন কী ফোন দেয়া ঠিক হবে? পলির সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে খুব। কিছু যদি মনে করেন ডা. পারমিতা। ধীর লয়ে হাঁটছি। মন ছুটে গেছে ট্রেনের সেই কামরায়। বেনি দোলানো, ডাগর চোখের অষ্টাদশী। আসলেই কী প্রেম এমনই। বলা নেই কওয়া নেই বাঁধ ভাঙা জলের মত হুহু করে ঢুকে যায় মনের বন্ধ দরজা ভেঙে। তারপর প্লাবনে প্লাবনে ধুয়ে মুছে নিয়ে যায় সব একাকীত্ব, সব দুঃখ- জরা। প্লাবন শেষে প্রেমবোধের পলিমাটিতে জন্ম নেয় অযুত সহ¯্র ভালবাসার চারাগাছ।

কত কিছুই তো ভাবছি। হাঁটতে হাঁটতে ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের সড়কের মাঝখানে কখন এসে গেছি জানিনা। আনমনা এই মন , করে উচাটন- গানটার কথা মনে পড়ছে। পেছন থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার ভেঁপুতে লাফিয়ে চলে এলাম নিরাপদ দূরত্বে। ভাবছি ফোন দেবো, দ্বিধা দ্বন্দের মধ্যেই ডায়ালে ভেসে উঠলো ইনকামিং কল। ডা. পারমিতা। ভাবনারা কী তবে টেলিপ্যাথি হয়ে ছুটে গেল হবিগঞ্জে।

হ্যালো স্লামালেকুম আন্টি।

ওয়ালেকুম সালাম।

ভাল আছ?

জ্বি আন্টি ভাল।

কোথায় তুমি?

বাইরে আন্টি। একটু বাজারে গেছিলাম।

ওই, আপনি আন্টি আন্টি করছেন ক্যান?

মানে কী, তুমি পলি!!!

হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহহাহাহাহা।

হাসির রিনিঝিনি ঝরে পড়তে লাগল আমার ফোনের ডায়াল বেয়ে। এত সুন্দর করে কেউ হাসতে পারে জানা ছিলনা। থতমত খেলেও খুশিই হলাম পলি নিজে থেকে ফোনটা দেয়ায়।

আপনি আমার গলা চেনেন না বুঝি?

নাহ, চিনব না কেন?

এই যে, বোকা হয়ে গেলেন, হাহাহাহাহাহা।

আমাকে বোকা বানিয়ে বুঝি খুব মজা পেলে!

না, তাহ হবে কেন? আমি তো বলিনি যে আমি ডা. পারমিতা। আপনিই তো বানিয়ে নিলেন।

এটা তো ডা. পারমিতারই ফোন, তাইনা? কী করে বুঝবো যে কলটি তিনি করেননি।

কেন বুঝবেন না! কিছু কিছু অপেক্ষার ফোন কল আসে, যা দেখলেই বুঝে নিতে হয় কে করেছে। এটা তো মনের ব্যাপার তাই না!

তা হয়তো ঠিক। কিন্তু সেজন্য তো মনে সেই পরিমান জায়গা করে নিতে হয়। তখন মনই অটো সাজেশন দিতে থাকে। এর পর কী! এরপর কী!

ওহ, তাহলে আপনার মনে আমি জায়গা করে নিতে পারিনি মোটেও, তাইনা !
বলেই চুপ হয়ে গেল পলি। কথাটা কী মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল! লজ্জা পেয়েছে বোঝাই যাচ্ছে। নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া আর কিছু শুনতে পাচ্ছিনা। পরিস্থিতি নিজেই হালকা করে নিলাম।

মনের ভিতর কী আছে তা দেখার চোখ থাকতে হয়। সেই চোখ যদি তোমার থাকে, দেখে নিও।

হুম, আপনি কোথায় এখন?

বাইরে পলি। বাজারে গেছিলাম। সারাদিন কাজের পর আধাঘন্টা হেঁটে বাজারে যাই। একটু ঘুরে ফিরে বাসায় ফিরি।

আপনার বাসাটা বুঝি খুব সুন্দর? শুনেছি শ্রীমঙ্গল, বড়লেখার ওদিককার চা বাগানগুলো খুব সুন্দর।

হুম, সাজানো বাগানের মত। তুমি এসো, বেড়িয়ে যেও। ভাল লাগবে।

আমাকে নেবেন ওখানে?

নিতে তো চাই। এসে ঘুরে যেও।

শুধু কী ঘুরে যাব? রাখবেন না!

কেন রাখব না। যে কয়দিন ইচ্ছা ঘুরবে ফিরবে- থাকবে।

যান, যাবনা আপনার ওখানে।

কেন! রাগ করার কী হল!

সে আপনি বুঝবেন না!

তুমি বুঝি খুব বোঝ!

হুম, বুঝি। কিছু ব্যাপার না বুঝলে মেয়েদের চলে না।

খুব ভাল! তো কী বুঝলে!

আপনাকে কেন বলব? যা বুঝেছি তা মনেই থাক।

ওহ, তাই বুঝি! ঠিক আছে, তবে থাক বলোনা।

এই শোনেন, ভাব দেখান না! শুনতে চান কী না সেটা বলেন।

তুমি তো বলবেনা বললা!

হুম, সব কথা কী বলতে হয়। কিছু কথা বুঝে নিতে হয়। শোনেন আপনি হবিহঞ্জ আসছেন কবে?

আসব যে কোন দিন।

যে কোন দিন না। বলুন কবে আসবেন। আমাদেরও তো প্রিপারেশন আছে। মা’র কাজে ঢাকা দৌড়াতে হয়। দাদুবাড়ি যাই সপ্তাহে সপ্তাহে।

দাদুবাড়ি যেন কোথায়?

বানিয়াচঙ।

আপনি কিন্তু কথা ঘুরাচ্ছেন। কবে আসবেন বলুন।

শোন, নতুন চাকরি। একটু থিতু হই। সব কাজ বুঝে নেই। কিছুদিন যাক।

থাকেন আপনার চাকুরি নিয়া।

এভাবে গাল ফুলালে চলবে?

আমি গাল ফুলালাম আপনাকে কে বলল? বয়েই গেছে আমার কারোর জন্য গাল ফুলিয়ে থাকতে!

দেখা যাবে..হুহ।

কী বললেন..। এই শোনেন- আম্মু কথা বলবে।

স্লামালেকুম আন্টি।

ওয়ালেকুম সালাম। ভাল আছ বাবা?

হুম আন্টি। বাইরে ছিলাম। এইযে এখন ঘরে ঢুকবো।

ঠিকমত খেও। কোন সমস্যা হলে জানিও আমাদের।

ঠিক আছে আন্টি।

আর হ্যাঁ শোন, আগামী মাসের পাঁচ তারিখে পলির জন্মদিন। তুমি চার তারিখেই চলে এসো।

ঠিক আছে আন্টি, আসব।

ঠিক আছে বাবা। ভাল থেক। পরে আবার কথা হবে

ঘরে ঢুকে ঝটপট ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলাম। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। খেয়ে বিছানায় আধশোয়া হলাম। নির্জনতা ভেঙে খান খান করে দিয়ে অনবরত ডেকে যাচ্ছে কয়েকটি শিয়াল। ঘরের খুব কাছে দিয়েই ঘুরছে ওরা। জানালা খুলে দিলাম। হুহু করে হিমেল হাওয়া ঢুকে শীতল হয়ে গেল ঘর। পায়ে কাঁথা জড়িয়ে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এর লোটাকম্বল খুলে বসলাম। মোবাইল ফোন পেটের ওপর। আবার যদি জ্বলে ওঠে ডায়াল। সেই কাঙ্খিত নাম ডা. পারমিতা। লোটাকম্বলের ভিতরে ডুবে কখন মধ্যরাত টের পাইনি। ঘোরের মধ্যে ছিলাম যেন এতক্ষণ। সাতসকালে আবার অফিস, কিন্তু ঘুমের কোন নাম নেই। ইচ্ছে করছে অন্ধকারে বাইরে বেরিয়ে খানিকটা হেঁটে আসতে।

ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলাম। মোবাইল ফোনের স্ক্রিণে রাত বারটা পয়তাল্লিশ। ঝিঁঝি পোকা ডেকে চলেছে অনবরত। ঘরের বাইরে টিলার ওপর কয়েকটি বাতি গিলে খেয়েছে কুয়াশা। আবছা অন্ধকারে হাঁটছি। ঝোপের ভেতর দিয়ে নেমে গেলাম টিলা থেকে। মোবাইল ফোনে টর্চ জ্বালানোর অপশন থাকলেও ইচ্ছে করছেনা। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। বুকের ভেতরটা কেমন জানি ফাঁপা ফাঁপা লাগছে। উদাসী বাঁশির সুর ভেসে আসছে দূরের শ্রমিক পল্লী থেকে। খুব কাছ দিয়েই গোঁ গোঁ করতে করতে ছুটে গেল কয়েকটা খেকশিয়াল। গা ছমছম করে উঠল। শেয়ালের দল আক্রমণ করে বসতে পারে, সে বিষয়টি মাথায়াই এল না। হাঁটছি। নিশুতি পাখি ডেকে চলেছে দূরের কোন রেইনট্রি থেকে। শুইইক। শুইইক।

অদ্ভুত সুন্দর রাত। চা পাতা চুঁয়ে ফোটা ফোটা শিশির পড়ছে। এমন নির্জনতায় শিশিরের টুপটাপ শব্দও আলাদা করে কানে ভাসছে। ঠিক যেন মনে হচ্ছে পৃথিবী নামের গ্রহটিতে আমি একা, খুব বড় একা। ত্রিসীমানায় আর কোন জনমানব নেই। হিংসা নেই, ক্রোধ নেই। চাওয়া পাওয়ার জটিল অংক নেই। আচ্ছা এখন যদি পলি থাকতো। তাহলে কী এই পৃথিবীতে আমরা শুধু দুজনই থাকতাম!

আবছায়ায় গাছের ফাঁক দিয়ে আকাশের দিকে তাকালাম। কুয়াশা ছাড়া আর কিছুই নেই দৃষ্টিসীমায়। হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন ঘাড়ে হাত রাখল। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। এমন নির্জনতায় তো এখানে কেউ আসার কথা না। ঘাড় ঘুরিয়ে গলা শুকিয়ে গেল। নির্বাক। ট্রেনে আসতে যে দাদাজানকে স্বপ্নে দেখেছিলাম, তিনি। খাকি হাফ প্যান্ট। মাথায় হ্যাট। হাতে লাঠি। পাকানো গোঁফের ফাঁক দিয়ে ঝকমকে দাঁত বের করে হাসি দিয়ে খপ করে ধরে ফেললেন আমার হাত। দৌড় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে ধরে ফেলায় যেন পাথর হয়ে গেলাম। স্থবির হয়ে আটকে গেলাম মাটির সাথে। অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল লোকটা।

কী, খুব ভয় পেলে বুঝি। সৈয়দ আবুল বাশারের নাতি ভয় পায়… হাহাহাহাহা। কী হে! চুপ মেরে গেলে যে।
বলেই হাতের লাঠি দিয়ে গুতো দিলেন পেটে। ব্যাথায় কেকিয়ে উঠলাম। আসলেই কী আমি দাদাজানকে দেখছি বারবার। নাকি পরাবাস্তব কোন জগতে ঢুকে গেছি এখানে আসার পর থেকে! শুনেছি বাবার জন্মের কয়েকদিন পরেই দাদাজান মারা যান।

কী, চুপ করে রইলে যে বড়! চল আমরা হাঁটতে থাকি।

না, আমি আপনার সঙ্গে কোথাও যাব না।

কেন হে, চল তোমাকে ঘরে পৌঁছে দেই। এত রাতে একা বাইরে, কী করে একা ছাড়ি বল! চল।

আপনি কেন আমার পিছু নিয়েছেন বলুন তো!

আসলে তোমার বাবাকে পাইনি তেমন করে। সে তো জীবন জীবিকা নিয়ে সেই ঘিঞ্জি শহরে থেকে গেল। আমার আবার শহর পছন্দ না। নির্জনতা, পাখির ডাক, শান্ত পুকুরের জল, নদীর পাড়ের খোলা হাওয়ায় অভ্যস্ত আমি। তোমার বাবাকে পাইনি এমন নির্জনতায়। তাতে কী! তুমি তো এলে হে!

আপনি দয়া করে আমার পিছু ছাড়–ন।

হাহাহাহা, দাদাজানকে কেউ এভাবে বলে না- ভাই। অপমান হয়। আর মুরুব্বিদের অপমান করতে নেই। এনিওয়ে এইতো কাছেই চলে এসেছ। আচ্ছা শোন, পলি মেয়েটাকে কিন্তু আমার খুব পছন্দ।

সে কী! আপনি পলির কথা জানলেন কিভাবে! আর তার সাথে তো আমার তেমন কিছু নেই ও!

হাহাহাহাহা, কিছু প্রশ্নের কোন উত্তর হয়না দাদাভাই। চল তোমাকে পৌঁছে দেই।
টিলা বেয়ে উঠছি তো উঠছি, এ পথ আর যেন শেষ হয়না। ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। হাঁপাচ্ছি থেমে থেমে। লোকটা গটগটিয়ে উঠে আবার নেমে এসে আমার হাত ধরে টানছেন। আমি জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। আর উঠতে পারছিনা। কড়ি ফুলের একটা ঝোপ ধরে টেনে ওঠার চেষ্টা করতেই পা পিছলে গেলাম। গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছি টিলা থেকে। দাদাজান ছুটে আসছেন। বুক ধড়ফড় করছে। ছোট ছোট ঝোপ মাড়িয়ে পড়ে যাচ্ছি। প্রাণপণ চিৎকার করছি। বাঁচাও বাঁচাও। হঠাৎ দরজায় ধড়াম ধড়াম শব্দ।

বাবু, কী হয়েছে। দরজা খুলুন। আমি উপেন।

চোখ কচলাতে কচলাতে দরজা খুললাম। সূর্য বেশ খানিকটা উপরে। তাহলে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম। মোবাইল ফোনের স্ক্রিণে সকাল সাড়ে সাতটা। উপেন হাসল। বুঝতে পেরেছে স্বপ্ন দেখছিলাম। আমিও হাসি ফিরিয়ে দিয়ে ধড়াম করে দরজা বন্ধ করে ঝড়ের গতিতে রেডি হলাম। উপেন নাশতা নিয়ে হাজির। আটটা বেজে গেছে। দেরি হয়ে গেছে। উপেনের হাতে থাকা ট্রে থেকেই একটা পরটা আর খানিকটা ভাজি মুখে নিলাম। আটটা ডিম জমা হয়ে গেছে ঘরে। উপেনের হাতে ডিমগুলো দিয়ে বললাম- পরিবার নিয়ে খাবেন। ডিম হাতে দাঁড়িয়ে রইল উপেন।

আমি ছুটলাম অন্য টিলায়। আলাউদ্দিন টি এস্টেট লিমিটেড এর পরিপাটি অফিস ঘরে অপেক্ষা করছেন ম্যানেজার সেলিম চৌধুরী। দেড় কোটি টাকার একটা অর্ডার ফাইনাল হবে আজ। বেলজিয়ামের এক বায়ারের সঙ্গে ইমেইলে যোগাযোগ করেছিলাম। বায়ার আসবেন সাড়ে দশটায়। ডিল ফাইনাল হলে পারমান্যান্ট ক্লায়েন্ট হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে কোম্পানিটি। ডিল সাকসেসফুল হলে আমার জন্যও নাকি রয়েছে সারপ্রাইজ। আলাউদ্দিন টি এস্টেট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলাউদ্দিন চৌধুরী এমপি গতকালই সে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। দেখা যাক কী হয়। এক দৌড়েই পৌঁছে গেলাম অফিসে।

চলবে…

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement