২৫ এপ্রিল, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে দূর্বল ব্যাংক তদারকিতে চুক্তি হচ্ছে

Advertisement

আর্থিক সূচকে দূর্বল অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তাদের (সিএফও) সঙ্গে সভা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সভার পর এসব ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল), বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও বিদেশি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সঙ্গে সভা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো কোনোটির সঙ্গে তিন বছর মেয়াদি এমওইউ সই হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার বিকেলে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স) সঙ্গে সভা করবেন গভর্নর। এতে যোগ দেবেন পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, এমডি তারেক রিয়াজ খানসহ কয়েকজন পরিচালক এবং সিএফও।

বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব ব্যাংকের সঙ্গে সভা করছে, তার সব কটিই ডুবতে থাকা ব্যাংক। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যেসব ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হচ্ছে, সেগুলোকে বিশেষ তদারকিতে রাখা প্রয়োজন। এ জন্য ব্যাংকগুলোর দেওয়া তথ্যের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসা অনিয়মগুলোকে বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ, পরিদর্শনে অনেক ব্যাংকের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ খেলাপিযোগ্য বলে ধরা পড়েছে। এই উদ্যোগের ফলে নতুন করে আরও ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়া বন্ধ হতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার যোগ দিয়েই দূর্বল ব্যাংকগুলোকে পৃথকভাবে তদারকির উদ্যোগ নেন। এরপর ৩ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ১০টি দূর্বল ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করা হবে।

সেদিন জানানো হয়, খেলাপি ঋণের মাত্রা, মূলধন পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশন তথা সঞ্চিতির পরিমাণ—এই চার সূচকের ভিত্তিতে দূর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি ব্যাংকের অগ্রগতি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ আগে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক, বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি করেছে। এগুলোর কয়েকটিতে ও এর বাইরের কয়েকটিতে পর্যবেক্ষক বসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলোর অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি ঘটছে না। এ রকম পরিস্থিতিতে নতুন করে আরও ১০ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে।

আজ ফারমার্স ব্যাংকের সঙ্গে সভা
ফারমার্স ব্যাংক নাম থাকাকালে ঋণ বিতরণে নানা অনিয়মের কারণে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকটির ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ঘটে। সরকারের উদ্যোগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৫ ব্যাংক মিলে ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেয়। এরপর এটির নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক। ব্যাংকটি এখন ক্ষুদ্র আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে পারলেও প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। গত জুন শেষে ব্যাংকটির ৫ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৬৭ শতাংশ।

পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ খান গতকাল রোববার জানান, তাঁদের ব্যাংকে আমানত সম্প্রতি ছয় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। খেলাপি ঋণও আদায় হচ্ছে। ইতিমধ্যে গাড়ি ঋণ চালু করা হয়েছে। সামনে এসএমই ও আবাসন ঋণ চালু হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement