২৫ এপ্রিল, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

খন্দকার মোশতাককে ঢাবি অধ্যাপকের শ্রদ্ধা, তোলপাড়

Advertisement

মুজিবনগর দিবসে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রহমত উল্লাহ বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ ১৭ এপ্রিল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। সভায় বক্তব্য দেন সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষকনেতা মো. রহমত উল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার সভা সঞ্চালনা করেন।

জানা যায়, সভায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অন্য মন্ত্রীদের পাশাপাশি তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুনি মোশতাকের অবদা‌নের কথা উল্লেখ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. সামাদ ছাড়াও সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভাপতির পর বক্তব্য দিতে এসে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. সামাদ।

সভায় উপস্থিতরা বলছেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি তার বক্তব্যে মোশতাককে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরে অধ্যাপক সামাদ প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন। পরে উপাচার্য বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেন।

তবে খন্দকার মোশতাকের নাম নিলেও তাকে শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ।এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ব‌লেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতির মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি সত্য। আমি  সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়েছি। খন্দকার মোশতাক মু‌ক্তিযু‌দ্ধের পু‌রো সময় বাংলা‌দে‌শের স্বাধীনতার বিরু‌দ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত ছি‌লেন এবং পা‌কিস্তা‌নের স‌ঙ্গে কন‌ফেডা‌রেশন করার ষড়যন্ত্র ক‌রে‌ছি‌লেন। মু‌ক্তিযুদ্ধ চলাকা‌লে তা‌কে চো‌খে চো‌খে রাখ‌তে হ‌য়ে‌ছে। শিক্ষক স‌মি‌তির সভাপ‌তির বক্তব্য ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ কর‌বে না।

সভায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতির বক্তব্যের পরই প্রো-ভিসি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান৷ তিনি উপাচার্যের নিকট এ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান। উপাচার্য তা এক্সপাঞ্জ করেন। আমি মনে করি মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এভাবে বক্তব্য দেওয়া ধৃষ্টতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের বক্তব্য গ্রহণ করতে পারে না৷ অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বলেন, মুজিবনগর সরকার নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমি স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত আট মাসে ওই সরকারের অবদান নিয়ে কথা বলেছি। সেখানে খন্দকার মোশতাকসহ মুজিবনগর সরকারে যারা ছিল তাদের নাম নিয়েছি। কিন্তু কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাইনি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে কেন আমি ইতিহাস বদলাতে যাব?

তিনি আরও বলেন, আমি সজ্ঞানে বলছি আমি তার (খন্দকার মোশতাকের) প্রতি শ্রদ্ধা জানাইনি। তারপরও আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement