আগের বছরের তুলনায় গত বছর ৩৭ কোটি টাকা মুনাফা কমেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের। এ কারণে শেয়ারহোল্ডারদের আগের বছরের চেয়ে ৫ শতাংশ কম লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ।
কোম্পানিটির (৩০ জুন) ২০২২ সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। (২৫ অক্টোবর) মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইর তথ্য মতে, সরকারকে কর পরিশোধসহ সব আয়-ব্যয়ের পর (৩০ জুন) ২০২২ সালে কোম্পানির মোট মুনাফা হয়েছে ২০১ কোটি ৪৫ লাখ ৪২ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। তাতে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৩৬ পয়সা। যা আগের বছরের চেয়ে ৩৭ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭১ টাকা কমেছে।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির মোট মুনাফা হয়েছিল ২৩৮ কোটি ৫১ লাখ ৪২ হাজার ৭৬৩ টাকা। তাতে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৭ টাকা ৫৩ পয়সা।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কোম্পানি সচিব রকিবুল কবির। তিনি বলেন, বর্তমানে কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩১ কোটি ৬৭ লাখ ৫২ হাজার ২৭টি। জুন সমাপ্ত বছরের এই শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ। যা আগের বছরের চেয়ে ৫ শতাংশ কম।
তাতে ২০২২ সালে শেয়ারহোল্ডাররা টাকার অংকে শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ পাবেন ৫ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৫ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা কম লভ্যাংশ পাচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা।
রাকিবুল করিম বলেন, এ বছর যেমন ব্যবসা আগের চেয়ে বেশি হয়েছে, তেমনি গত বছরের চেয়ে কর বেশি দিতে হয়েছে। পাশাপাশি ডলারের দাম বেশি থাকায়, বেশি দামে ডলার কিনে কোম্পানির কাঁচামাল আমদানির জন্য পেমেন্ট করতে হয়েছে। এ কারণে ব্যবসা বেশি হলেও ডলারের অতিরিক্ত মূল্যে ও কর বেশি দেওয়ায় মুনাফা কমেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের ডলারের মূল্য কমলে আগামী বছর কোম্পানির মুনাফা বড়বে। তাতে বিনিয়োগকারীদেরও মুনাফা বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
পর্ষদ ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী (২৬ ডিসেম্বর)। ওইদিন ডিজিটাল প্লাটফর্মে কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে। লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণে কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে (১৭ নভেম্বর)।
২০১১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বর্তমান ব্যাংক ঋণ রয়েছে ১৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আজ দিনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য ছিল ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে ৫২১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কোম্পানির ৩১ কোটি শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৭১ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার, বিদেশিদের হাতে রয়েছে দশমিক ১৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার।
এছাড়াও কোম্পানিটি ১০-১২ বছরের পুরোনো এএআরএএমএএক্স ওয়েল ট্যাংক ৩০ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ইউএস ডলার দিয়ে কেনার পরিবর্তে নতুন এএআরএএমএএক্স ওয়েল ট্যাংকার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার মূল্য ধরা হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন ডলার।