১৯ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারী হয়েও কুরআনের হাফেজ

Advertisement

অদম্য ইচ্ছাশক্তি যে বহু কঠিন জিনিসকে সহজ করে দেয় তার বাস্তব দৃষ্টান্ত সৌদি আরবের ৩২ বছর বয়সী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারী হুদা আত-তাইয়িব। অন্ধ হয়েও পবিত্র কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছেন তিনি। সম্প্রতি আরবি গণমাধ্যম আজিলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কুরআনে কারিম মুখস্থ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তিনি। হুদা আত-তাইয়িবের সাক্ষাৎকারের ভাষান্তর করা হলো-

হুদা আত-তাইয়িব বলেন, শৈশবেই স্বপ্ন দেখতাম কুরআনুল কারিম মুখস্থ করব, কিন্তু অন্ধ হওয়ার কারণে তা সহজ ছিল না। কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করতে অসংখ্য বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি। তবে কখনো চেষ্টা ও সাধনা ছাড়িনি। আলহামদুলিল্লাহ! এই বয়সে উপনীত হয়েও কুরআন হিফজ করতে পেরেছি।

সর্বপ্রথম আমি হাফেজা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাই রাসূলুল্লাহ সা:-এর হাদিস থেকে। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে কুরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়। ’

কোনো সন্দেহ নেই প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর অন্তরে কুরআনের প্রতি সম্মান রয়েছে। আর এ কথাও প্রমাণিত যে, উম্মাহর সাফল্য ও সংশোধনে কুরআনের ভূমিকা ব্যাপক; বরং সমগ্র মানবজাতির ওপর পবিত্র এই গ্রন্থের প্রভাব স্বীকৃত। আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস ছিল, বান্দা কুরআনের মাধ্যমে সম্ভ্রান্ত ও উম্মাহর জন্য কল্যাণের বাহক হতে পারে। কুরআন ও কুরআনচর্চার মর্যাদাসংক্রান্ত আয়াত হাদিস আমাকে কুরআনের প্রতি বেশি আকৃষ্ট করে।

কয়েক বছর আগে আমি পর্যায়ক্রমে কয়েকটি কুরআন মুখস্থকরণ কোর্সে ভর্তি হই। এভাবে প্রথম কোর্সে কয়েক পারা মুখস্থ করি, দ্বিতীয় কোর্সে হিফজ সম্পন্ন হয়, তৃতীয়টিতে সম্পূর্ণ কুরআন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শোনাই এবং সব শেষ কোর্সে আরো টাটকা মুখস্থ করে সহপাঠীদের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হই।

কুরআন হিফজ করার কল্যাণ যাত্রায় আমাকে সাহায্যকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা, পিতা-মাতা ও বান্ধবীদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। কুরআনের বেশিরভাগ অংশ আমি অডিও মশক শ্রবণ করে মুখস্থ করেছি—এ জন্য দূরের এসব কারির প্রতিও সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জানাই। এখন আমি কুরআন-হাদিসের উচ্চতর জ্ঞানার্জনের সংকল্প করেছি।

আমি কুরআনের হাফেজা হয়ে জীবনের যে স্বাদ অনুভব করেছি, তা আগে কখনো অনুভব করিনি। হাফেজা হওয়ার পর আমার জীবন বরকতপূর্ণ হয়েছে। এ জন্য সুস্থ-অসুস্থ সবাইকে অন্তত কুরআন তেলাওয়াতের আহ্বান জানাই। আমার অনুরোধ কুরআনের জন্য সময় ব্যয় করুন। ইনশাআল্লাহ! কাঙ্ক্ষিত জীবন লাভ করবেন। নতুবা কুরআন থেকে দূরে থাকার কারণে আফসোস করতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement